রিজেন্ট হাসপাতালে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে প্রতারণা ফাঁস হওয়ার পর পালিয়ে যাওয়া সাহেদকে ১৬ জুলাই ভারতের সীমান্তবর্তী এই দেবহাটা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ১১ মিনিটে সাহেদকে গ্রেপ্তারের স্থান দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের শাখরা কোমরপুরের নিয়ে আসে র্যাব। লাবণ্যবতী নদীর উপর কোমরপুরের বেইলি ব্রীজে নিয়ে আসা হয় তাকে।
এ সময় উৎসুক জনতা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের ব্রিজ থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরিয়ে ৫-৭ মিনিট কথাবার্তা বলে সাহেদকে গাড়িতে উঠায় র্যাব। সাহেদের মুখমণ্ডল ছিল হেলমেটে ঢাকা, গায়ে ছিল গেঞ্জি ও র্যাবের নিরাপত্তা জ্যাকেট। ব্রিজের উপর থেকেই আবার গাড়িতে উঠিয়ে ফের খুলনার উদ্দেশে রওয়ানা দেয় র্যাব।
এ সময় সাংবাদিকদের কোনো ধরনের প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতে বলেন র্যাব কর্মকর্তারা।
আদালতে অভিযোগপত্র
সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইরুল ইসলাম বিকালে আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে সাহেদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে, এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে সবোর্চ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে বলে জানান সাইরুল ইসলাম।
সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সে সময় সাহেদকে নিয়ে অভিযানে গিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেনও বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে কোভিড-১৯ পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় সাহেদ তাদের কাছে রিমান্ডে থাকার সময় ১৮ জুলাই রাতে তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। পরে তার দেখান মতে উত্তরায় তার ব্যবহারের একটি গাড়ি থেকে এক রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল এবং কিছু মাদক পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এই মামলায় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী দুইজন ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দিয়েছে বলেও জানান বাতেন।
এছাড়া সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে এক রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভূইয়ার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের এসআই জালাল জানিয়েছেন।
এখন বিচারক অভিযোগপত্রে দেখিলাম বলে স্বাক্ষর করবেন। পরে সামনের মাসের মাঝামাঝি সময়ে মামলাটির ধার্য তারিখে অভিযোগপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে (মহানগর দায়রা জজ) পাঠানো হবে।