এদিকে তার বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটির এজাহার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এরই মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহার সংশোধন করতে আদালতে আবেদন করেছেন। তবে সেই আবেদনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কাজলের আইনজীবী।
গত ৯ মার্চ ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা করেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর।
পরদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’ অফিস থেকে বের হওয়ার পর থেকে কাজল নিখোঁজ ছিলেন। তাকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ করে ১৮ মার্চ চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।
নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত ২ মে রাতে ভারতের সাদিপুর থেকে বেনাপোলে প্রবেশের সময় কাজলকে আটক করার খবর দেয় বিজিবি।
পরদিন অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির দায়ের করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরবর্তীতে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫৪ ধারায় সন্দেহভাজন হিসাবে সাধারণ ডায়েরিতে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তার কাজলকে ঢাকায় এনে পরে আদালতের মাধ্যমে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।
কাজল নিখোঁজ হওয়ার পর ১০ ও ১১ মার্চ ঢাকার হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয়।
হাজারীবাগ থানায় মামলাটি করেন যুব মহিলা লীগের নেত্রী ইয়াসমিন আরা ওরফে বেলী। কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলাটির বাদী সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা নামে এক নারী।
কামরাঙ্গীরচর থানায় করা মামলায় কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে বুধবার কাজল জামিন আবেদন করলেও ভার্চুয়াল শুনানিতে তা নাকচ করে দেন ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়ে কাজলের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, এই মামলার এজাহার সংশোধনের আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “ফৌজদারি কার্বিধি অনুযায়ী এজাহার সংশোধনের কোনো সুযোগ আইনে নেই। সেকথা আমরা বিচারককে বললেও সেটা গ্রাহ্য করা হয়নি।”
এজাহারে কী সংশোধন করা হচ্ছে- জানতে চাইলে ব্যারিস্টার বড়ুয়া বলেন, “এ মামলার এজাহারে হাজারীবাগ থানার মামলার এজাহারের সঙ্গে হুবুহু মিল। থানার নামও ভুল রয়েছে। যেটি বিস্ময়ের উদ্রেক করেছে সবার মধ্যে। সে কারণে বিচারকের কাছে কামরাঙ্গীরচর থানার মামলাটির এজাহার সংশোধন চেয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।”
ডিবির এসআই রাসেল মোল্লা এখন মামলাটি তদন্ত করলেও তার আগের তদন্ত কর্মকর্তা এই আবেদনটি দাখিল করে যান।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই শওকত আকবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে স্বীকার করেন যে এজাহারে কামরাঙ্গীরচর থানার নাম ভুল লেখা হয়েছে ।
যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িত’দের নাম প্রকাশ নিয়ে লেখালেখির কারণে কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাগুলো হয়।
এদিকে কাজলের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তার মুক্তির দাবিতে ফেইসবুকেও সোচ্চার অনেকে।