৫৪ বছর বয়সী ইসরাফিল গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সোমবার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে তার ভাগ্নে মনোয়ার হোসেন ডন জানান।
নওগাঁর আত্রাই-রাণীনগর আসনের এই সাংসদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি এক শোকবার্তায় বলেছেন, “শ্রমিক রাজনীতি দিয়েই তার রাজনীতিতে পদার্পণ। তিনি সংসদে সবসময় খেটে-খাওয়া সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরতেন। তার মৃত্যুতে দেশ একজন প্রতিশ্রুতিশীল ও নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতাকে হারালো।”
আর প্রধানমন্ত্রী তার শোকবার্তায় বলেছেন, “ইসরাফিল আলম আজীবন দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন।”
নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম
পরে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা বেড়ে গেলে ১৭ জুলাই আবারও স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ইসরাফিল আলমকে।
তার ছোট বোন রুনু গত শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সম্প্রতি মা মারা যাওয়ার পর বাড়ি থেকে ফিরেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তার ভাই।
“এরপর কোভডি-১৯ নেগেটিভ হলেও মানসিক ও শারীরিকভাবে তিনি ছিলেন খুবই দুর্বল। তার ফুসফুস ৩০ শতাংশের বেশি কাজ করছিল না।”
ইসরাফিল আলমের ভাগ্নে ডন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজই মামার মরদেহ নওগাঁ নিয়ে যাওয়া হবে।”
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঝিনা গ্রামে জানাজা শেষে মাগরিবের নামাজের পর সাংসদ ইসরাফিল আলমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে থানা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রচারণা সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যার আসাদুজ্জামান পিন্টু জানান।
এই ঝিনা গ্রামেই ১৯৬৬ সালে ইসরাফিল আলমের জন্ম। তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে মিটার রিডার হিসেবে তিনি চাকরি করেছেন দীর্ঘদিন।
সেখানেই তিতাস কর্মচারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের মাধ্যমে তার রাজনীতির শুরু। শ্রমিক রাজনীতিতে তিনি ছিলেন আহসানউল্লাহ মাস্টারের শিষ্য।
নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম
এক সময় ঢাকা মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা ইসরাফিল মৃত্যু পর্যন্ত ছিলেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ইসরাফিল। সেই সংসদে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি।
আর বর্তমান সংসদে ওই কমিটির পাশাপাশি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন টানা তিনবারের এই এমপি।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরাফিল আলম নিজ এলাকায় মেধাভিত্তিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের লিখিত পরীক্ষা নেন। তখন বিষয়টি খুব আলোচিত হয়।
শ্রমজীবী মানুষের জন রাজনীতি করে কেন্দ্রে উঠে আসা এই রাজনীতিবিদ স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন