দেশটির অভিবাসন মহাপরিচালক খায়রুল জাইমি দাউদ শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শুক্রবার গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি শ্রমিক মো. রায়হান কবিরকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
“বাংলাদেশি এই নাগরিককে ফেরত পাঠানো হবে এবং তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে, যাতে আর কখনোই মালয়েশিয়ায় ঢুকতে না পারে।”
রায়হানকে গ্রেপ্তারের কারণ কিংবা তিনি কোনো অপরাধের সাথে জড়িত কিনা, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
তবে গত ৩ জুলাই আল জাজিরা টেলিভিশনে একটি প্রামাণ্য প্রতিবেদন সম্প্রচারিত হয়, যেখানে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন রায়হান কবির।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, মহামারীর মধ্যে অবৈধ শ্রমিকদের আটক ও জেলে পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়া সরকার বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।
তবে দেশটির সরকারের কর্মকর্তারা আল জাজিরার ওই খবর ‘ভুল, বিভ্রান্তিকর এবং অন্যায্য’ বলে দাবি করেন।
ওই প্রতিবেদন সম্প্রচারের পর দেশটিতে ক্ষোভের সঞ্চার হলে রায়হানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ আল জাজিরার সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসাবাদে তলব করার পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো অভিযোগ তুলেছে, দেশটির সরকার গণমাধ্যমের প্রতি দমনমূলক আচরণ করছে।
রায়হান কবিরের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা কোনো বক্তব্য না দিলেও টেলিভিশনটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের কর্মী এবং ওই প্রতিবেদনে যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল, তাদেরকে হয়রানি, হত্যার হুমকি এবং ব্যক্তিগত তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে লকডাউন শুরু হলে মালয়েশিয়া সরকার শিশু, রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ কয়েকশ অবৈধ শ্রমিককে আটক করে।
মালয়েশিয়া সরকারের কর্মকর্তারা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতেই অবৈধ অভিবাসীদের আটকের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলেও অধিকারকর্মীরা এ ধরনের ধরপাকড়কে ‘অমানবিক’ বলছেন।
দেশটির স্থানীয়রাও অভিবাসী শ্রমিকদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য অভিবাসী শ্রমিকদের দায়ী করার পাশাপাশি তাদেরকে দেশটির সরকারের জন্য বোঝা মনে করছেন মালয়েশিয়ার জনগণ।