সাহেদকে নিয়ে অভিযান, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার

জালিয়াতির মামলায় রিমান্ডে থাকা রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে নিয়ে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে কথা জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2020, 07:39 AM
Updated : 19 July 2020, 07:53 AM

শনিবার রাতে ওই অভিযানের পর বিতর্কিত এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে নতুন দুটো মামলা করেছে পুলিশ।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ সাহেদকে নিয়ে উত্তরার সোনারগাঁও জনপথ মোড় এলাকায় ওই অভিযান চালায়।

“সাহেদের ব্যবহৃত একটি গাড়ি সেখানে পাওয়া যায়। ভেতরে পাওয়া যায় একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ১০ বোতল ফেন্সিডিল ও পাঁচ বোতল বিদেশি মদ।”

পরে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল গাফ্ফার সেদিন রাত আড়াইটার দিকে সাহেদের বিরুদ্ধে মামলা দুটি দায়ের করেন বলে জানান ওসি।

করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রমাণ পাওয়ার পর গত ৭ ও ৮ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্ট মালিক সাহেদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কীভাবে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, সেসব তথ্যও এখন গণমাধ্যমে আসছে।

রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।

এরপর গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সেদিনও তার কাছে একটি লাইসেন্সবিহীন পিস্তল ও গুলি পাওয়ার কথা জানানো হয়।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, কলপে চুল কালো করে বোরাকা পরে নৌকায় করে দেবহাটা সীমান্তবর্তী নদী পেরিয়ে সাহেদ ভারতে ‘পালানোর চেষ্টায়’ ছিলেন।  

তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনার পর ১৬ জুলাই আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে রিজেন্ট হাসপাতালের জালিয়াতির মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন গোয়েন্দা পুলিশকে।

চার মাস আগে বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পরপরই রিজেন্ট হাসপাতালকে ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে হিসেবে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল সরকার।

সে সময় দুটি ডায়ালাইসিস মেশিন, একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, দুটি আইসিইউ ভেন্টিলেটর ও দুটি ডায়ালাইসিস বেড বেন্ড দেওয়া হয়েছিল রিজেন্ট হাসপাতালকে।

সেসব যন্ত্রপাতি ফেরত আনার জন্য সহায়তা চেয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে গত ১৩ জুলাই একটি চিঠি পাঠায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার।

১৬ জুলাই এক ব্রিফিংয়ে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আব্দুল বাতেন বলেছিলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ ‘প্রতারণার কথা স্বীকার’ করেছেন।

“এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের বেশ কিছু মেশিনপত্র র‌্যাবের অভিযানের আগেই সরিয়ে ফেলার কথাও বলেছেন। সেগুলো এখন কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়েও সাহেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

আরও পড়ুন