রিজেন্টের সাহেদ ও মাসুদ ১০ দিনের রিমান্ডে

মহামারীর মধ্যে চিকিৎসার নামে প্রতারণা আর জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও এমডি মাসুদ পারভেজকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2020, 05:11 AM
Updated : 16 July 2020, 07:57 AM

গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে করা আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসীম বৃহস্পতিবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয় থেকে সাহেদ ও মাসুদকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আদালতেও নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানো হয়।

মহানগর হাকিম আদালতের কলাপসিবল গেইট বন্ধ রেখে কেবল দুই পক্ষের আইনজীবীদের ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়। সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

মহামারীকালে রিজেন্ট হাসপাতালের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির খবর ফাঁসের পর পালিয়ে যাওয়া সাহেদ বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্তে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েন। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয় ঢাকায়।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, কলপে চুল কালো করে বোরাকা পরে নৌকায় করে দেবহাটা সীমান্তবর্তী নদী পেরিয়ে সাহেদ ভারতে পালানোর চেষ্টায় ছিলেন।  

আর রিজেন্ট গ্রুপের এমডি মাসুদ পারভেজকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরে কাপাসিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যেই র‌্যাব সাহেদের সন্ধান পায়।

বুধবার বিকালে উত্তরার র‌্যাব সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেল র‌্যাবপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “তিনি (সাহেদ) অনেক কিছু বলেছেন, তবে তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাবে না।”

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সাহেদ ও মাসুদকে মামলা তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

চার মাস আগে বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পরপরেই রিজেন্ট হাসপাতালকে ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে হিসেবে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দেয় সরকার।

কিন্তু করোনাভাইরাস পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রমাণ পাওয়ার পর র‌্যাব গত ৬ থেকে ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়।

র‌্যাবের ওই অভিযানের পর রিজেন্টের মালিক মোহাম্মদ সাহেদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির খবরও সংবাদমাধ্যমে আসতে শুরু করে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক পরিচয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কীভাবে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, সেসব তথ্যও এখন গণমাধ্যমে আসছে। 

রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর ৭ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‌্যাব। সাহেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তার ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়।

এ মামলায় রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদ ও এমডি মাসুদসহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে আরও আটজন এখনও পলাতক।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানিয়েছেন, এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব চেয়ে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে র‌্যাব।

আরও খবর