জেকেজির সিইও আরিফুল ফের রিমান্ডে

পরীক্ষা না করে করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরীকে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2020, 03:54 PM
Updated : 16 July 2020, 06:30 AM

মামলার তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে আরিফুলের সহযোগী ও তার ভগ্নিপতি সাঈদ চৌধুরীরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান।

জেকেজির দুর্নীতিতে গ্রেপ্তার ডা. সাবরিনা আরিফের সম্পৃক্ততা কতটুকু, তা খতিয়ে দেখতে তার সঙ্গে তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ।

করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রতারণার ঘটনায় এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুলকে গত ২৩ জুন গুলশান থেকে গ্রেপ্তারের পর দুদিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিল থানা পুলিশ।

এরমধ্যে গত ১২ জুলাই ডা. সাবরিনাকে গ্রেপ্তারের পর মামলার তদন্তভার পায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়, তখন ডিবিই সাবরিনাকে রিমান্ডে নেয়।

তবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়ায় স্বামী আরিফুলের সঙ্গে তাকে মুখোমুখি বসানোর পরিকল্পনা করে ডিবি। এজন্য আরিফুল ও সাঈদকে দ্বিতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করা হয়।

বুধবার ভিডিও কনফারেন্সে ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারক দুজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই ফরিদ মিয়া জানান।

গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার গোলাম মোস্তফা রাসেল মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তারা আলোচিত এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জেকেজির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি জানার চেষ্টা করছেন।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার সাবরিনা (গ্রেপ্তারের পর বরখাস্ত) জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিত হলেও তিনি এখন স্বামীর ওই সংস্থার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকারের পাশাপাশি আরিফুলের সঙ্গে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়া চলার কথাও বলছেন। এই বিষয়টি নিশ্চিত হতেই সাবরিনা ও আরিফুলকে একসঙ্গে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

রাসেল বলেন, “প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান থাকা না থাকার সাথে অপরাধের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে অপরাধের সাথে সাবরিনার সম্পৃক্ততা কতটুকু, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, জেকেজির শুধু নমুনা সংগ্রহ করার কথা থাকলেও তারা টাকার বিনিময়ে প্রতিবেদন দিয়েছে, এটা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত।

জেকেজির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল এবং নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিত।

এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকারের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজির সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। জেকেজির নমুনা সংগ্রহের যে অনুমোদন ছিল, তাও ২৪ জুন বাতিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ওই ঘটনায় করা মামলায় সাবরিনা, আরিফুল ও সাঈদ ছাড়াও হুমায়ুন কবীর হিরু, তানজীন পাটোয়ারী, জেকেজির কর্মী মামুনুর রশিদ ও বিপ্লব গ্রেপ্তার রয়েছেন।

এদের মধ্যে হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।