আরও চার ব্যাংকে সাহেদের হিসাবের তথ্য চেয়েছে দুদক

রিজেন্ট গ্রুপের আট প্রতিষ্ঠান ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের হিসাবের নথিপত্র চেয়ে আরও চার ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2020, 02:03 PM
Updated : 15 July 2020, 02:03 PM

বুধবার দুদক উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিকের স্বাক্ষরে চিঠিগুলো ওইসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে পাঠানো হয়েছে বলে কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

এসব চিঠিতে আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুসন্ধান দলের প্রধানের কাছে নথিপত্রগুলো পাঠাতে বলা হয়েছে।

দুদকের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ব্যাংক এশিয়ার কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ের করপোরেট শাখা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মতিঝিলে প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১ এ এনআরবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ওই চার ব্যাংকে সাহেদ ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে হিসাব রয়েছে বলে দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান।

ওইসব ব্যাংক থেকে সাহেদ ও তার প্রতিষ্ঠানের হিসাব খোলার আবেদনপত্র (সংযুক্তিসহ), কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসেসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিক্যালস অব অ্যাসোসিয়েশন, ট্রেড লাইসেন্স, হিসাব বিবরণী, ঋণ গ্রহণের আবেদন, মঞ্জুরীপত্র, বন্ধকী দলিল, বন্ধকী সম্পত্তির টাইটেল ডিড, মামলার আর্জি ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত কপি চাওয়া হয়েছে।

অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ওইসব তথ্য চাওয়া হয় বলে চিঠিগুলোতে উল্লেখ করা হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার সাহেদের প্রতিষ্ঠানের হিসাবের নথিপত্র চেয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উত্তরা শাখার ম্যানেজার, দ্য ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের বিমানবন্দর শাখা ম্যানেজারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।

দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, অনুসন্ধানে সাহেদের মালিকানাধীন রিজেন্ট গ্রুপের আটটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে। এগুলো হলো- রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড, রিজেন্ট কেসিএস লিমিটেড, মুনলাইট রিসোর্ট, ফোর স্টার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মুনলাইট বিল্ডার্স, রিজেন্ট ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনলজি, ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ, দ্য ডেইলি অন্য দিগন্ত ও কর্মমুখি কর্মসংস্থান সোসাইটি।

চিঠিগুলোতে সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে বলা হয়, মাইক্রোক্রেডিট ও এমএলএম ব্যবসার নামে জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ, বহুমাত্রিক জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, আয়কর ফাঁকি, ভুয়া নাম ও পরিচয়ে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এর আগে সোমবার মো. সাহেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে দুদক। উপ-পরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে টিমের অপর দুই সদস্য হলেন- সহকারী পরিচালক মো. নেয়ামুল হাসান গাজী ও শেখ মো. গোলাম মাওলা।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর আবার রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ রিজেন্ট হাসপাতালে নানা অনিয়মের খবর সম্প্রতি প্রকাশ্য হয়েছে র‌্যাবের অভিযানের মধ্য দিয়ে।

গত সপ্তাহে ওই অভিযানের পর রিজেন্টের দুটি হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে র‌্যাব। ওই হাসপাতালের অনুমোদনও বাতিল করা হয়েছে।

এ ঘটনায় করা মামলায় বুধবার সকালে সাতক্ষীরা দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এছাড়া হাসপাতালের আরও নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।