মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৫ অগাস্ট পর্যন্ত ওই সিটির জনপ্রতিনিধিদের বর্তমান মেয়াদ রয়েছে। মেয়াদ শেষ হলে আইনানুগভাবে প্রশাসক নিয়োগ করা হবে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর পাশাপাশি অতি বর্ষণ ও পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৫ অগাস্টের মধ্যে আটকে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তের কথা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠিতে জানানো হয়েছে।
গত ২৯ মার্চ এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৫ সালে ৬ অগাস্ট। সে হিসেবে এ কপোরেশনের মেয়াদ শেষ হবে ৫ অগাস্ট।
স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, “বর্তমানেও করোনা প্রভাব অব্যাহত থাকায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং অতি বৃষ্টি ও পাহাড় ধসের আশঙ্কা বিবেচনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদকালের মধ্যে অর্থাৎ ৫ অগাস্টের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না বলে কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।”
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে প্রশাসক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে সে অনুযায়ী এ করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করা হবে। এখনও মেয়াদ শেষ হতে সময় রয়েছে। যথাসময়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
আইনের ২৫ ধারায় (অবস্থা বিশেষে প্রশাসক নিয়োগ) বলা হয়েছে- (১) এই আইনের অধীন কোন নূতন সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হলে অথবা কোন সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত করা হলে অথবা কোন সিটি কর্পোরেশন মেয়াদোত্তীর্ণ হলে, সরকার, সিটি কর্পোরেশন গঠিত না হওয়া পর্যন্ত উহার কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ নিতে পারবে। (২) সরকার, প্রয়োজনবোধে, যথাযথ বলে বিবেচিত হয় এমন সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত কমিটিকে প্রশাসকের কর্ম সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের জন্য নিয়োগ করতে পারবে। (৩) প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ, যদি থাকে, যথাক্রমে মেয়র ও কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবে। (গ) কোন সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদোত্তীর্ণের ক্ষেত্রে ১৮০ দিনের বেশি দায়িত্বে থাকিতে পারবেন না প্রশাসক। স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “৫ অগাস্টের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন করা সম্ভব না হলে আমরা নির্বাচন কমিশনের মতামত নেব। তারপর সব কিছু পর্যালোচনা করে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।”
|
পরে সুবিধাজনক সময়ে মন্ত্রণালয় অনুরোধ করলে কমিশন ভোটের তারিখ নির্ধারণ করবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান প্রার্থীরাই বহাল থাকবেন এবং যেখানে ভোট স্থগিত হয়েছিল সে অবস্থা থেকে নির্বাচন হবে।
মৃত্যজনিত যেসব পদ এর মধ্যে শূন্য হবে সে বিষয়ে কমিশন তখন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান ইসি কর্মকর্তারা।
স্থগিত হওয়া চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ৫৫ পদে ২৬৯ প্রার্থী রয়েছেন ভোটে।
মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা), বিএনপির শাহাদাত হোসেন (ধানের শীষ), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন (মিনার), এনপিপির আবুল মনজুর (আম), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা) ও স্বতন্ত্র খোকন চৌধুরী (হাতি)।