চিকিৎসাবর্জ্যের বিধিসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে সরকারকে উকিল নোটিস

চিকিৎসাবর্জ্যের বিধিসম্মত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 July 2020, 01:07 PM
Updated : 12 July 2020, 01:07 PM

একজন পরিবেশবিদ ও একটি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে রোববার ইমেইলে নোটিসটি পাঠিয়েছেন আইনজীবী মো. হুমায়ুন কবির পল্লব ও মোহাম্মদ কাউছার।

পরিবেশ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক, দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের এ নোটিস দেওয়া হয়েছে।

নোটিসে চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮ এর বিধান পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নোটিসে বলা হয়েছে, চিকিৎসা বর্জ্য (ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ) বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৩ অনুযায়ী দেশের প্রত্যেক বিভাগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের সভাপতিত্বে তিন সদস্যের একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হয়েছে।

এই কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেবে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিধি অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য এমনভাবে ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাত করবে যাতে মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে।

এছাড়া বিধির তফসিল ৬-এ চিকিৎসা বর্জ্য পরিশোধনের যে মানদণ্ড দেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

আইনজীবী হুমায়ুন কবির পল্লব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ন্যূনতম তিন বছর সংরক্ষণ করার বিধান রয়েছে।”

“বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ আছে চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ, পরিবহন, পরিশোধন ও বিনষ্ট করার আগেই তফসিল অনুযায়ী উৎপাদনের স্থানে আলাদা করে রাখতে হবে।

“বিধি ৪ অনুযায়ী তা ঢাকনাযুক্ত করতে হবে। অশোধিত কোনো চিকিৎসা বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার বেশি মজুদ করে রাখা যাবে না। কেবলমাত্র সুনির্দিষ্ট ও সুরক্ষিত এলাকাসমূহে এ চিকিৎসা বর্জ্য মজুদ করা যাবে।”

আইনজীবীরা পল্লব বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি কর্তৃপক্ষ বিধিমালা অনুযায়ী তেমন কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলশ্রুতিতে অন্য বর্জ্যের মতো চিকিৎসা বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ দূষণ ঘটছে। বিশেষ করে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এ আশঙ্কা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। সরকারিভাবে লাখ লাখ পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, হচ্ছে। এর বাইরে প্রায় সবাই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করছে।

“সেই সাথে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নানা সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে এসব চিকিৎসা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে না পারলে বড় ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।  কাজেই প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা না গেলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়বে। এ বিষয়গুলো বিবেচনা করেই জনস্বার্থে নোটিসটি পাঠানো হয়েছে।”

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে জনস্বার্থে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান এই আইনজীবী।

করোনারভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক, গ্লাভস, পিপিইসহ এজাতীয় মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এর আগে সরকারকে আইনি নোটিস দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।

স্বাস্থ্য সচিব, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়  মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু  পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার কাছে গত ৯ জুন নোটিসটি পাঠিয়েছিলেন তিনি।