বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে ‘কোরবানির পশুর হাটে সুস্থ-সবল গবাদিপশু সরবরাহ ও বিক্রয় নিশ্চিতকরণ’ সংক্রান্ত এক অনলাইন সভায় মন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সভায় শ ম রেজাউল করিম জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এ বছর এক কোটি ১৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ পশু কোরবানির জন্য মজুদ রয়েছে।
এসব পশুর মধ্যে হৃষ্টপুষ্ট গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৩৮ হাজার এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭৩ লাখ ৫৫ হাজার ও অন্যান্য চার হাজার ৫০০টি।
সভায় মন্ত্রী বলেন, “কোরবানির জন্য কোনো অবস্থাতেই বিদেশ থেকে গবাদিপশু আনার অনুমতি দেয়া হবে না। করোনার কারণে গবাদিপশু বিপণনে এবছর আমরা অনলাইন বাজারের উপর জোর দেয়ার চেষ্টা করছি।
“আসন্ন ঈদুল আজহায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে পর্যাপ্ত গবাদিপশু সরবরাহ ও বিপণনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে কোরবানি করে পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
শ ম রেজাউল করিম জানান, এবার পশুর হাটগুলোতে মন্ত্রণালয়ের ১২০০ মেডিকেল টিম কাজ করবে, যাতে রুগ্ন গবাদিপশু বাজারে না আসতে পারে।
সেজন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে। কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোরবানির সময়ে খামারিসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা করার জন্য মাঠ পর্যায়ের সব প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
সেখানে তিনি বলেন, “গবাদিপশুর পরিবহনে কোনোভাবেই যেন চাঁদাবাজি না হয়। সিন্ডিকেট করে ট্রাক আটকানো বন্ধ করতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে।
“খামারি ও গবাদিপশু বিক্রেতারা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হয়। যারা হাটের বাইরে পশু বিক্রি করবে তাদের কাছে যেন কেউ টোল বা হাসিল তুলতে না যায়। এ বিষয়গুলোতে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।”
“ট্রাকের পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে স্বল্প খরচে রেলওয়ের মাধ্যমেও গবাদিপশু পরিবহন করা যাবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ দপ্তরগুলো ট্রেনের রুট ও সিডিউল ঠিক করে দেবে।”
পশুর চামড়া এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারদের তাদের আওতাধীন জেলা, উপজেলা, পৌর এলাকা ও গ্রামের হাট-বাজারের বিষয়ে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এ সভায় যোগ দেয়া বিভাগীয় কমিশনাররা জানান, প্রতিটি জেলা প্রশাসন মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে কোরবানির গবাদিপশু কেনাবেচার উদ্যোগ নিয়েছে ।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিভাগের অন্তত ৩০ শতাংশ গবাদিপশু কেনাবেচা করার চেষ্টা থাকবে বলেও কমিশনাররা আশ্বস্ত করেন।
মন্ত্রী জানান, গবাদিপশু বিপণন ও পরিবহন সমস্যা সমাধানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হটলাইন স্থাপন করা হবে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক হটলানে যুক্ত হবেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল জব্বার শিকদার, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নাথু রাম সরকার সকালের সভাটিতে অংশ নেন।
এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বিজিবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এবং প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিদের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অনলাইনে এ সভায় অংশ নেন।