বিচারের সুযোগ সীমিত, ‘ঝুঁকিতে নারী ও শিশুরা’

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারসহ যেভাবে সীমিত পরিসরে আদালত পরিচালনা হচ্ছে তাতে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2020, 12:52 PM
Updated : 6 July 2020, 12:54 PM

তাই নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় শারীরিক উপস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম চালুসহ বিচার তরান্বিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।  

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যালএইড উপপরিষদের আয়োজনে সোমবার এক অনলাইন মতবিনিময় সভা থেকে এ দাবি উঠে আসে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেয়াদ-আল-মালুম বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে নারী নির্যাতনের নালিশী মামলার কার্যক্রম স্থগিত। স্থগিত হয়ে যাওয়া মামলাগুলো চালুর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

“নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে নালিশী মামলা করার এবং পারিবারিক আদালতে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।”

নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে দুই হাজার ৩০০ মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকার তথ্য তুলে ধরে অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টে আসামি আত্মসমর্পণের কোনো সুযোগ নেই। প্রয়োজনে বিশেষ আদালত করে জটিল মামলাগুলো পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

ব্যারিস্টার একে রাশেদুল হক বলেন, করোনভাইরাসের কারণে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এর প্রতিকারে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

“বর্তমানে ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম সীমিত হওয়ায় শুধু থানাতেই নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রভাবশালীদের কারণে থানায় মামলা করা অনেক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং। এক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার বৃদ্ধি করা যেতে পারে।”

বর্তমান পরিস্থিতিতে থানা মামলা না নিলে আদালতে মামলা করা যাচ্ছে না জানিয়ে মহিলা পরিষদের লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড লবি পরিচালক এডভোকেট মাকছুদা আখতার বলেন, “নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব না হলে আমরা আরও পিছিয়ে পড়ব।”

ভার্চুয়াল আদালতের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, “সিপিসি, সিআরপিসি অনুযায়ী ভার্চুয়াল কোর্টে সব প্রসিডিউর সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সীমিত পরিসরে হলেও নিয়মিত আদালত চালু করা না গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”

আইনজীবী মাসুদা রেহানা বেগম বলেন, “অনেক পুরানো মামলার শুনানি হচ্ছে না। এগুলো এখন ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে করা প্রয়োজন।”

মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন।