ফেইসবুক প্রতারণার আরেক মামলায় গ্রেপ্তার ওই তিন বিদেশি

ফেইসবুকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর ভাটারা থানার আরেক মামলায় তিন বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 July 2020, 12:37 PM
Updated : 6 July 2020, 12:37 PM

এই আসামিরা হলেন- সোলেমান ওরফে গুইন্যাং টেগোমো বের্টিন, গুইন্যাং তোয়োসের্জ ক্রিশ্চিয়ান ও ইকোনগো ইরনাস্ট ইব্রাহিম। এদের একজন কেনিয়ার এবং দুজন ক্যামেরুনের নাগরিক বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তাদের নতুন করে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করলেও বিষয়টি জানা যায় সোমবার।

রোববার তিনজনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ভাটারা থানার এই প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয় বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কমর্কর্তা এসআই মাজহারুল ইসলাম জানান। এ সময় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।

বিচারক তদন্ত কর্মকর্তার ওই আবেদন মঞ্জুর করেন।

এর আগে শুক্রবার গুলশান থানার প্রতারণার এক মামলায় এই তিন বিদেশি নাগরিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান। 

গত বুধবার রাতে ভাটারা এলাকা থেকে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সে সময় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই বিদেশিরা ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন’। প্রথমে তারা ফেইসবুকে ভুয়া আইডি ও নাম ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। এতে যারা নিতান্তই সাধারণ তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করেন।

“এই সুযোগে প্রতারক চক্রের সদস্যরা বিদেশ থেকে বিভিন্ন দামি উপহার পাঠানোর কথা বলে এবং সেটি কাস্টমসে আটকে আছে দাবি করে মোটা অংকের টাকা চায়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশি কেউ কাস্টমসের কর্মকর্তা অথবা সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার কাজে সহায়তা করেন।

“প্রতারক চক্রের গ্রেপ্তার সদস্যরা জেনেটার নামে একজন নারীর নামে ভুয়া আইডি খুলে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ফয়সালের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। জেনেটার নিজেকে একজন আমেরিকান হিসেবে পরিচয় দেন এবং ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলামকে কুরিয়ারের মাধ্যমে উপহার পাঠাবেন বলে জানান।

“পরে আরিফুলকে উপহারসামগ্রী পাঠানোর কথা বলে চক্রটি বিভিন্ন সময়ে নগদ আট লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার কাছ থেকে মোট ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে নেয় এই চক্রের তিন সদস্য।”

গ্রেপ্তার আসামিদের কারও কাছেই পাসপোর্টের কোনো কপি পাওয়া যায়নি জানিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা রেজাউল হায়দার বলেন, “ধারণা করা হচ্ছে, তাদের ভিসার মেয়াদ নেই। অবৈধভাবে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব এবং তাদের সঙ্গে আরও কোনো সদস্য আছে কি না, তা জেনে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”

এই আসামিরা আক্রমণাত্মক জানিয়ে তিনি বলেন, “অভিযানকালে তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর বিভিন্ন ধরনের হামলার চেষ্টা করেন।”