দায়িত্বের বাইরে গিয়েও সেবা দিয়েছে পুলিশ: আইজি

করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে পুলিশ জনগণের পাশে গিয়ে যেভাবে সেবা দিয়েছে, তার বেশিরভাগই পুলিশের কাজ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2020, 04:02 PM
Updated : 4 July 2020, 04:02 PM

শনিবার বিকালে রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আয়োজিত বিশেষ অপরাধ ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বেনজীর আহমেদ বলেন, “চলমান করোনাকালে গত তিন মাসে পুলিশ বদলে গেছে।পুলিশ জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পুলিশ এত সম্মান, এত মর্যাদা আর কখনও পায়নি।

“যারা কথায় কথায় পুলিশের সমালোচনা করতেন, তারাও আজ পুলিশের পক্ষে হৃদয় উজাড় করে বলছেন, পুলিশকে সমর্থন করেছেন। যে সম্মান মর্যাদা গত তিন মাসে পাওয়া গেছে তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না। মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে মানুষের সাথে থাকতে হয়, তাদের কাছে যেতে হয়, মানুষকে ভালোবাসতে হয়।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশ আর পেছনে ফিরে যাবে না, জনগণের পাশে এখন যেমন করোনাকালে আছি, পরের দিনগুলোও সেইভাবেই জনগণের সম্মান ও ভালোবাসা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।”

পুলিশের নিষ্ঠুরতা বন্ধ করে আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে বলেও জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডিএমপির সব থানার ওসিসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশে বাস্তবসম্মত বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে বদলির তদবির কালচারকে চিরতরে বিদায় করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন আইজিপি।

“ইতিমধ্যেই গতানুগতিক ধারা পাল্টে বদলিতে আনা হয়েছে নতুনত্ব,” বলেন তিনি।

অধিকাংশ পুলিশ সদস্য সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার কথা বিবেচনা করে ঢাকার বাইরে যেতে চান না। চিকিৎসার ক্ষেত্রে একই অবস্থা।

এসব বিষয় মাথায় রেখে ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগের কথা জানিয়ে বিভাগীয় শহরগুলোতে মানসম্মত চিকিৎসা সুবিধাও

নিশ্চিত করার কথা জানান তিনি।

মাদক আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরোর টলারেন্স উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, “পুলিশে কোনো দুর্নীতিবাজের ঠাঁই নেই। মাদকের সাথে কোনো পুলিশ সদস্যের সম্পর্ক থাকবে না।পুলিশকে হতে হবে মাদকমুক্ত।”

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ চিকিৎসায় গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে মাত্র দুই সপ্তাহে দ্বিগুণ শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির পাশপাশি দ্রুত সময়ে পিসিআর মেশিন বসানো, বিভাগীয় হাসপাতালগুলো আধুনিকায়ন করা হয়েছে। 

“শুধু তাই নয়, পুলিশ সদস্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আবাসন ব্যবস্থা এবং ডিউটিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।এর ফলে পুলিশ সদস্যদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমেছে এবং মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে।”

আইজিপি বক্তব্যের শুরুতে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।