ভোর ৬টা থেকে সেখানে শুরু হচ্ছে ‘লকডাউন’। এই সময়ে সেখানে স্বাভাবিক জীবনযাপনে থাকবে কড়াকড়ি, যা চলবে ২৫ জুলাই পর্যন্ত।
শুক্রবার এসব এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে বাঁশ দিয়ে বানানো হচ্ছে ব্যারিকেড। মোড়ে মোড়ে টানানো হয়েছে ‘লকডাউন’ লেখা ব্যানার।
অবরুদ্ধ লাল অঞ্চলে ২১ দিন থাকবে সাধারণ ছুটি। এলাকার সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-কারখানা বন্ধ থাকবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী যারা এ এলাকায় বসবাস করেন, তারাও থাকবেন ছুটির আওতায়।
পুলিশ জানিয়েছে, লকডাউন শুরু হলে রেড জোনে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হওয়া মানা। এসব এলাকার ভেতরে সব ধরনের চলাচল বন্ধ, প্রবেশ বা বের হওয়ার সুযোগ থাকবে নিয়ন্ত্রিত।
২১ দিনের লকডাউনের জন্য প্রস্তুতি নিতে র্যানকিন স্ট্রিটের একটি সপার শপে বেলা সাড়ে ১১টায় কেনাকাটার ভিড় দেখা যায়।
লারমিনি স্ট্রিটের একটি অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক কানিজ ফাতেমা বলেন, ‘কালকে থেকে লকডাউন শুরু, সবকিছু বন্ধ থাকবে। চাল, ডাল, চিনি, লবণ, আলু, পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখতে হচ্ছে।”
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে লকডাউন চলে। এরপর বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এখন এলাকাভিত্তিক লেকডাউন হচ্ছে।
টিপু সুলতান রোডের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা নাবিল আহমেদ বলেন, “ওই সময় (মার্চ-এপ্রিল) তো আসলে যে রকম লকডাউন হয়েছে, সেটা নাকি এবার হবে না। সব কিছু নাকি বন্ধ থাকবে। রাস্তায় নাকি হাঁটা-চলাও করা যাবে না।
“কমিশনারের লোকজন মাইকিং করছেন বার বার। বিষয়টা তো সিরিয়াস মনে হচ্ছে। ঘরের ভেতরে ২১ দিন পরিবার নিয়ে কাটাতে হবে।”
‘লকডাউন’ বাস্তবায়নে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি থাকবে সেনাবাহিনীর টহল। এছাড়া এলাকার ভেতরে থাকবেন স্বেচ্ছাসেবীরা। বলধা গার্ডেনের কাছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে।
লকডাউন চলাকালে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের একটি বুথ থাকবে এ এলাকায়। সিটি করপোরেশনের মহানগর জেনারেল হাসপাতালে আক্রান্তদের আইসোলেশনের ব্যবস্থাও হয়েছে।
র্যানকিং স্ট্রিটের বাসিন্দা দেবাশীষ রায় বলেন, “গতকাল আমাদের অ্যাপার্টমেন্টে এসে স্বেচ্ছাসেবকরা বলে গেছেন, জুররি প্রয়োজনে কিছু লাগলে তারা দিয়ে যাবেন। সেজন্য নির্ধারিত নম্বরে ফোন করে অর্ডার দিতে হবে।”
বেশ কয়েকটি শপিংমল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুম এবং ফাস্ট ফুডের দোকান রয়েছে এ এলাকায়। তবে লকডাউন শুরুর আগের দিন সড়ক ও অলি-গলিগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা।
স্থানীয় কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান আলো বলেন, “সব প্রস্তুতি আমাদের শেষ পর্যায়। ভোর থেকে ২১ দিনের কার্য্ক্রম আমরা সুন্দরভাবে শুরু করতে পারব। সিটি মেয়র সব কিছু তদারকি করছেন। টাইম-টু টাইম খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।”