ভাড়ার জন্য সনদ-মালামাল ভাগাড়ে, হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ককে রিমান্ডে চায় পুলিশ

মহামারীর মধ্যে ভাড়া দিতে না পারায় শতাধিক ছাত্রের সার্টিফিকেটসহ মূল্যবান মালামাল ভাগাড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে রাজধানীর একটি বেসরকারি ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2020, 09:43 AM
Updated : 3 July 2020, 10:08 AM

গ্রেপ্তারের খোরশেদ আলম পূর্ব রাজাবাজার এলাকার আলিফ হোস্টেলের তত্ত্ববধায়ক।

কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ কুমার জানান, শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তারের পর এক ছাত্রের করা মামলায় রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের বেশি কিছু মালামাল খোরশেদের বাসা থেকে উদ্ধার হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খোরশেদসহ আরও কেউ শিক্ষার্থীদের মালামালগুলো চুরি করে নিয়ে যায় এবং কিছু মালামাল ডাস্টবিনের ফেলে দেয়।

একই অভিযোগে আরেক ছাত্রের মামলায় মুজিবুল হক নামে আরেক বাড়িওয়ালাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।

মামলার বরাত দিয়ে ওসি পরিতোষ জানান, আলিফ হোস্টেলে ১৩০ জন শিক্ষার্থী ও মুজিবুলের মালিকানাধীন কলাবাগানের ওয়েস্ট অ্যান্ড স্ট্রিটের রুবি ভবনের আরও আট শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন।

ওই শিক্ষারর্থীরা মহামারীতে ছুটিতে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন তাদের সার্টিফিকেট ও মালামালসহ ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ও বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে সজিব মিয়া ও সোয়ান মিয়া বৃহস্পতিবার রাতে আলাদা মামলা করেন।

সময় টিভির ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি

সজিব মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কলাবাগানের সাততলা ভবনের নিচতলায় তারা আটজন শিক্ষার্থী ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। গত চার বছর ধরে ওই নিচতলায় ভাড়া রয়েছেন।

আটজনের মধ্যে আইডিয়াল কলেজের সাজ্জাদ হোসেন, মো. সোহেদ, সিটি কলেজের মো. তামিম ও তেজগাঁও কলেজের মো. অলিউল্লাহ এক বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী।  এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্বাবিদ্যালয়ের একজন, উন্মুক্ত বিশ্বাবিদ্যালয়ের ও একজন আইন বিষয়ে পড়াশুনা করে এমন একজন শিক্ষার্থীও তার সঙ্গে নিচে ভাড়া থাকতেন।

তিনি বলেন, মার্চ মাসের ৫ তারিখে ওই মাসের ভাড়া দিয়ে তারা গ্রামের বাড়িতে চলে যান। মাঝে ভবন মালিক মুজিবুল হকের সঙ্গে কথা হয় এবং ১৫ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো হয়।

সজীব বলেন, টাকা পাঠানোর পর মুজিবুল হক আর ফোন ধরেননি। উনি জুন পর‌্যন্ত তিন মাসের ভাড়া পাবেন কিন্তু উনাকে এক মাসের অগ্রিম দেওয়া আছে।

“আমাদের মালামাল ভাগাড়ে দেওয়া হয়েছে এমন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ছুটে এসে দেখি সত্যি সত্যি কিছুই নাই। কক্ষের সব মালামাল সিটি করপোরেশনের গাড়িতে দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারি।”

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাসের চতূর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সজিব বলেন, “একাডেমিক সার্টিফিকেট ছাড়াও আমার প্রেসিডেন্ট রোভার স্কাউট পদকের পরীক্ষার জন্য সংরক্ষিত লগ বইসহ সমস্ত ডকুমেন্ট ছিল। এখন আমি কী করব বুঝতে পারছি না।”

এদিকে পূর্ব রাজাবাজারের আলিফ হোস্টেলের ১৩০ জন শিক্ষার্থীর মালামাল ডাস্টবিনের ফেলে দেয় হোস্টেল কর্তৃপক্ষ।