খাবারে ভেজাল ধরতে ঢাকা দক্ষিণের পরীক্ষাগার

কেউ যেন খাবারে ভেজাল দিয়ে পার না পায় সেজন্য পণ্যের মান ও খাদ্যে ভেজাল যাচাইয়ে একটি পরীক্ষাগার চালু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2020, 10:54 AM
Updated : 2 July 2020, 10:54 AM

এডিবির অর্থায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর বঙ্গবাজারে এই খাদ্য পরীক্ষাগার উদ্বোধন করা হয়।

পরে নগর ভবনে সাংবাদিকদের কাছে নতুন এই ল্যাব নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “এই ল্যাবটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ল্যাব৷ ফলে এখন থেকে আমরা যে কোনো পণ্যের মান সঠিকভাবে নিরূপণ করতে পারব এবং ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। তাই ঢাকাবাসীর জনস্বাস্থ্য তথা স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করতে এই আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে খাদ্যে ভেজালের পরীক্ষা করা হলেও এই প্রথম কোনো সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নিজস্ব ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

ল্যাব না থাকায় এতদিন যে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে সে বিষয়ে মেয়র বলেন, “আগে যখন বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল পণ্যের ওপর জরিমানা করা হত তখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিত।

“তাদের যুক্তি ছিল, আমরা তাদের খাদ্যসামগ্রীর যথাযথ মান পরীক্ষা করেছি কি না বা করলেও পরীক্ষায় তার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে কি না? ফলে এ রকম অনেকগুলো মামলা এখনও ঝুলে আছে।”

তবে এখন নিজস্ব ল্যাব থাকায়  এমন ‘কোনো জাটিলতা’ থাকবে না বলে জানান তিনি।

ফজলে নূর তাপস বলেন, “আজকে এই ল্যাবের উদ্বোধনের ফলে এখন থেকে খাদ্যে ভেজালকারীরা তাদের মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে আরোপিত জরিমানা নিয়ে আর কোনো ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।

“যে কোনো খাদ্যসামগ্রীর মাণ নির্ণয়ের জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে, কিন্তু খাদ্যসামগ্রীর মাণ নির্ণয়ে আমাদের স্বয়ং-সম্পূর্ণতা ছিল না। আজকের এই ল্যাবের শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে আমরা মাণ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলাম।”

পরীক্ষাগারের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

খাদ্যের মানে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, মানুষের ইমিউনিটি বাড়লে, ভাইরাস সহজেই তাকে কাবু করতে পারে না। আর মানুষের ইমিউনিটি নির্ভর করে ফুড সাইকেলের ওপর। খাদ্য ভেজাল থাকলে মানুষ সহজেই ছোটখাটো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।

“দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে অধিকাংশ মানুষ প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ায় তাদের ইমিউনিটি ফল করেছিল (কমে গিয়েছিল)। ফলে যুদ্ধের চাইতেও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ছোটখাটো ভাইরাসের আক্রমণে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ। 

ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।