ছোট মেয়ের পাশে চির শয়ানে লতিফুর রহমান

ছোট মেয়ের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2020, 07:03 PM
Updated : 1 July 2020, 07:13 PM

বুধবার রাত ১০টায় বনানীর কবরস্থানে ছোট মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমানের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানের আজাদ মসজিদে লতিফুর রহমানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

সকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজের পৈত্রিক বাড়িতে মারা যান লতিফুর রহমান। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে লাশবাহী গাড়িতে করে তার মরদেহ গুলশানের বাসায় এসে পৌঁছায়। সেখানে আত্মীয়-স্বজন শেষ বিদায় জানানোর পর কফিন নিয়ে যাওয়া হয় গুলশান মসজিদে।
দীর্ঘদিন ধরেই ফুসফুসের সমস্যা ছিল লতিফুর রহমানের। তার সঙ্গে বার্ধক্যজনিত আরও কিছু জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ট্রান্সকম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনে নেতৃত্ব দেওয়া লতিফুর রহমান মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের (এমসিসিআই) সাত বারের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি তিনি ছিলেন দুইবার।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ছাড়াও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ চা অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটিতে ছিলেন তিনি। 

নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করা লতিফুর রহমান লিনডে বাংলাদেশের (সাবেক ব্রিটিশ অক্সিজেন কোম্পানি) পরিচালক এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডেরও সদস্য ছিলেন।

বাবার পাটকলে কর্মজীবন শুরু করে পরে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত হন। বর্তমানে ট্রান্সকম গ্রুপের ব্যবসা ছড়িয়ে আছে ইলেকট্রনিক্স, খাদ্যপণ্য, ওষুধ, চা, বেভারেজ, মিডিয়া, বীমাসহ নয়টি খাতে।

দৈনিক প্রথম আলোর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন লতিফুর রহমান। ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি।

ব্যবসায় সামাজিক দায়বদ্ধতা ও নৈতিক মান রক্ষার জন্য ২০১২ সালে অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পান লতিফুর রহমান।

স্ত্রী শাহনাজ রহমান, দুই মেয়ে সিমিন হোসেন ও শাজরেহ হক এবং ছেলে আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে রেখে গেছেন লতিফুর রহমান। তাদের আরেক মেয়ে শাজনীন রহমান ১৯৯৮ সালে বাড়ির এক পরিচারকের হাতে খুন হন।

চার বছর আগে এই ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যু হয়।