চিকিৎসক-নার্সদের থাকা-খাওয়ার ‘অস্বাভাবিক’ বিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীরও প্রশ্ন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এক মাসের থাকা-খাওয়ার খরচ ২০ কোটি টাকা কীভাবে হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 07:12 PM
Updated : 29 June 2020, 07:12 PM

এই ব্যয় ‘অস্বাভাবিক’ মন্তব্য করে এখানে অনিয়ম আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। 

সোমবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের ওপর আলোচনায় তিনি একথা বলেন। তার আগে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের আলোচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই বিল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় সরাসরি নিয়োজিত ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্পূর্ণ সরকারি খরচে হোটেলে থাকা, খাওয়া, যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে মাননীয় স্পিকার এখানে বিরোধী দলীয় নেতা ঠিকই বলেছেন যে, থাকা-খাওয়ায় একমাত্র মেডিকেল কলেজের হিসেব ২০ কোটি টাকা একটু অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।

“তবু এটা আমরা তদন্ত করে দেখছি যে, এত অস্বাভাবিক কেন হবে? এটা একটু স্বাভাবিকভাবেই অস্বাভাবিক হয়। সেটাও আমরা ব্যবস্থা নেব।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মেডিকেল যন্ত্রপাতি, টেস্ট কিট ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা এবং করোনাভাইরাসের চিকিৎসা সুবিধা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা দ্রুততম সময়ে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। আরও একটি প্রকল্প বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আমাদের করোনা মোকাবেলার সামর্থ্য আরও বাড়বে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

এর আগে আলোচনায় শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য গতানুগতিক বাজেট থেকে সরে এসে এবার বাজেটে সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে আসার কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য খাতকে এবার সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এ খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”

কোভিড-১৯ মোকাবেলায় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে জনজীবনকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ন্যাশনাল প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান প্রণয়ন করে তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় বর্তমানে ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তাছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার একটা বিশেষ থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

“বাজেট বরাদ্দের দিক থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অবস্থান পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে, যা গত অর্থবছরে ছিল অষ্টম স্থানে।”

করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে জনবল বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা অত্যন্ত অল্প সময়ে দুই হাজার ডাক্তার, ছয় হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। আরও দুই হাজার ডাক্তারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং নার্সও আমরা আরও চার হাজার নেব।

“সেই নির্দেশটাও আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে দিয়েছি, যাদের শিগগিরই নিয়োগ দেওয়া হবে। সেই সাথে হেলথ টেকনোলজিস্ট, কার্ডিওগ্রাফার এবং ল্যাব অ্যাটেনডেন্টের তিন হাজার নতুন পদও সৃষ্টি করা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”