বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘণ্টা পর একজন জীবিত উদ্ধার

ঢাকার শ্যামবাজারের কাছে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ ডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর একজনকে জীবিত উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 June 2020, 05:31 PM
Updated : 29 June 2020, 07:02 PM

সোমবার সকালে অপর একটি লঞ্চের ধাক্কায় মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা ছোট আকারের এই লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পরে সারা দিনে ৩২ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন ডুবুরিরা।

পরে রাতে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধারের সময় তাতে মধ্যবয়সী একজন পুরুষকে জীবিত পাওয়া গেছে বলে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত সোয়া ১০টার দিকে লঞ্চটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছিল, একপাশ একটু পানির উপরেও উঠানো হয়েছিল। ঠিক ওই সময় একজনকে দেখতে পায় ডুবুরি দল।

“ওই ব্যক্তি কথা বলতে পারেননি। শুধু হাত-পা নেড়েছেন এবং তাকিয়েছেন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

পানির ভেতরে ১৩ ঘণ্টা কীভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব- প্রশ্ন করা হলে ফায়ার ব্রিগেডের মহাপরিচালক বলেন, “দুর্ঘটনার সময় লঞ্চটি হঠাৎ উল্টে যায়। এভাবে হঠাৎ ‍উল্টে যাওয়ার পর লঞ্চের ভেতরে নিশ্চয়ই কোথাও ‘এয়ার পকেট’ তৈরি হয়েছে। তাই এত ঘণ্টা তিনি বেঁচে ছিলেন।”

সুমন ব্যাপারী (৩৫) নামের এই ব্যক্তি এখন মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানিয়েছেন।

সুমনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি বলে জানান তিনি।

এমএল মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ থেকে অর্ধ শতাধিক যাত্রী নিয়ে সদরঘাটের দিকে আসছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্যামবাজারের কাছে পৌঁছালে চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়।

সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, দুই লঞ্চের কর্মীদের অসতর্কতায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন।

তবে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যেভাবে ঘটনাটি দেখতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি ‘পরিকল্পিত’।

এ দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. রফিকুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক এবং বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে গঠিত এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।