বারডেমে চিকিৎসকদের আধাবেলা অবস্থান ধর্মঘট

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে আধা ঘণ্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2020, 02:50 PM
Updated : 28 June 2020, 02:50 PM

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় রোববার সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত ধর্মঘট শেষে বারডেমের মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।

স্মারকলিপিতে পিসিআর ল্যাব স্থাপন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আরএমও পদ বিলুপ্ত করে সব আরএমও/সহকারী রেজিস্ট্রার/এমওর চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এতে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকলে বারডেম জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত, ডায়াবেটিস ও নানা জটিলতা নিয়ে রোগীরা আসতে থাকে। কিন্তু হাসপাতালে পিসিআর মেশিন থাকলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সেখানে কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা চালু করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে রোগীদের ভোগান্তি এবং হাসপাতালের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

কোভিড-১৯ এবং ননকোভিড রোগী ভর্তির জন্য আলাদা কোনো প্রটোকল না থাকায় চিকিৎসা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

হাসপাতালে আসা রোগীদের কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য বাইরের হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হয়। রিপোর্ট আসতে দুই থেকে পাঁচদিন সময় লেগে যায়। এরইমধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন। কোভিড-১৯ আক্রান্ত এবং সন্দেহজনক রোগীরা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।

রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। উল্টো হাসপাতাল চিকিৎসকদের বেতন কেটে রেখেছে, ঈদ এবং বৈশাখী ভাতা দেয়নি বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের।

স্বারকলিপিতে বলা হয়েছে, বিষয়গুলো নিয়ে গত তিন মাসে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু বারবার এসব দাবি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। দাবি না মানলে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মূল দাবি চাকরি স্থায়ী করা। আরএমওদের অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর এই সময় কাজ করতে গিয়ে তারা যদি আক্রান্ত হয়, মারা যায় তাহলে তারা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা এই হাসপাতালে প্রশিক্ষণের জন্য আসে। প্রতি ছয় মাস পরপর তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। অনেকে চলেও যান।

“তারা বলছেন তাদের স্থায়ী করতে। এটা তো স্থায়ী করার কোনো বিষয় না। স্থায়ী করার একটা পদ্ধতি আছে। কিন্তু এখন তারা করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইছে। কিন্তু তারা যেভাবে চাইছে সেভাবে করার কোনো সুযোগ নাই।”