ভাইরাস সঙ্কট: চাকরির বয়স বিবেচনার প্রস্তাব যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে

দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে যাদের সরকারি চাকরির বয়স পার হয়েছে, তাদের বিষয়টি বিবেচনা করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকশহীদুল ইসলাম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2020, 11:20 AM
Updated : 24 June 2020, 11:26 AM

সময়মতো সেই প্রস্তাব সরকারপ্রধানের কাছে পাঠানো হবে জানিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলছেন, “ভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে যারা চাকরির বয়স হারিয়েছেন তাদেরকে জন্য কী করা যায়, আমরা সেই চিন্তা করছি।”

সাধারণ প্রার্থীরা ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগের আবেদন করতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য বয়স শিথিল করা হলে তা বিজ্ঞপ্তিতেই বলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর বিস্তার বাড়তে থাকায় গত ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটির মধ্যে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তার আগে গত ডিসেম্বর থেকে চাকরিতে নিয়োগের নতুন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি কমিশন।

তবে ৩০ মে সাধারণ ছুটি শেষে জুনের প্রথম সপ্তাহে নন-ক্যাডারে বেশ কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পিএসসি; সেখানে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ৩০ বছর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে গত ১ জুন পর্যন্ত।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা ২৬ মার্চের আগে আবেদন করেছেন তাদের পরীক্ষা যত দেরিতেই হোক না কেন কোনো সমস্যা নেই। দুই বছর পরে পরীক্ষা হলেও তাদের কোনো সমস্যা নেই।

“একটা শ্রেণি আছে যারা এরমধ্যে চাকরির বয়স হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করব। এই সঙ্কটের মধ্যে সবাইকেই তো কিছু কিছু প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। যারা চাকরির বয়সটা হারিয়ে ফেলেছেন তাদের জন্য একটা কিছু করা যায় কি না, আমরা সেই চেষ্টা করছি।”

এই মহামারীর মধ্যে যাদের সরকারি চাকরির বয়স চলে গেছে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন মিললে তাদের ক্ষেত্রে কী হতে পারে সে বিষয়েও একটা ধারণা দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

“বলা যেতে পারে যে, গত ২৫ মার্চ পর্যন্ত বয়স ৩০ বছর হতে হবে বা এ রকম কিছু একটা। তাতে তারা পরীক্ষাগুলো দিতে পারবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দেব, তিনি সম্মতি দিয়ে দিকনির্দেশনা দিলে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। তবে এখনও সেই সময় আসেনি, সময় এলে আমরা প্রস্তাব পাঠাব।”

এই মহামারীর মধ্যে সরকার সবাইকে মানবিকভাবে দেখছে বলেও মন্তব্য করেন ফরহাদ।

সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। তবে শেষ পর্যন্ত তা সরকারের সাড়া পায়নি।

কারোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে গেলে আগামী নভেম্বর মাসে বিসিএসের পরীক্ষাগুলো নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলছেন, “স্থগিত হওয়া সরকারি চাকরির অন্য নিয়োগ পরীক্ষাগুলো কবে নেওয়া হবে তা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। কবে সেই পরীক্ষাগুলো নেওয়া যাবে এখনই তা বলা যাচ্ছে না।”

গত ৩১ ডিসেম্বরের পর কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার আংশিক অর্থাৎ প্রিলিমিনারি, লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার ফল পিএসসি প্রকাশ করলেও করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে বেশিরভাগ নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। অন্য পদগুলোতে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ সম্পন্ন করে।

আরও পড়ুন