ওয়াসার পানির বাড়তি দাম আদায়ে নিষেধাজ্ঞা

ওয়াসার পানির জন্য ২৫ শতাংশ হারে বাড়তি দাম আদায়ের ওপর ১০ অগাস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2020, 07:29 AM
Updated : 5 Oct 2020, 08:32 AM

আড়াই মাস আগে কার্যকর হওয়া ওই দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক এবং রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। ওয়াসার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুবে আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

ওয়াসার আইনজীবী মাহবুবে আলম পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১ এপ্রিল থেকে ঢাকা ওয়াসা পানির দাম ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছিল, সে সিদ্ধান্তটি আগামী ১০ অগাস্ট পর্যন্ত ‘স্থগিত’ করে দিয়েছে দিয়েছে হাই কোর্ট।

১০ অগাস্ট পর্যন্ত কেন- এই প্রশ্নে মাহবুবে আলম বলেন, “কোর্ট হয়ত আশা করছে এর মধ্যে নিয়মিত কোর্ট চালু হতে পারে।”

তবে এ আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াসা আপিল বিভাগে আবেদন করবে বলে জানান ওয়াসার আইনজীবী মাহবুবে আলম; যিনি একই সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বাড়তি দামের সিদ্ধান্ত কোর্ট স্থগিত করেনি, নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

“আদালত শুনানির পর বাড়তি দাম আদায়ের ওপর ১০ অগাস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। রিট আবেদনেও আমি তাই চেয়েছি। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়তি দাম যেটা ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে, সেটা আর নিতে পারবে না ওয়াসা।”

আদালত কী বলেছে জানতে চাইলে আইনজীবী তানভীর বলেন, “ওয়াসার আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর আদালত বলেছেন, এরকম একটা মাহামরী পরিস্থিতির মধ্যে বাড়তি দামটা আপনারা প্রয়োগ করেছেন। আগামী ১০ অগাস্ট পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলাম।”

গত ১ এপ্রিল থেকে যে বাড়তি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে, তার কী হবে জানতে চাইলে রিটকারী আইনজীবী বলেন, “যেটা নিয়েছে, নিয়েছেই। এখন আর নিতে পারবে না।”

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, আইন সচিব, ঢাকা ওয়াসা, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষসহ ছয় জনকে বিবাদী করে গত ১৫ জুন হাই কোর্টে ‘জনস্বার্থে’ এই রিট আবেদন হয়।

পানির দাম বাড়িয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের জারি করা অফিস আদেশ কেন ‘বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না এবং পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইনের যে ২২(৩) ধারায় দাম বাড়ানো হয়েছে, তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সেই মর্মে রুল চাওয়া হয় আবেদনে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের ওই অফিস আদেশে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ১১ টাকা ৫৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা করার কথা বলা হয়।

আর বাণিজ্যিক সংযোগে প্রতি হাজার লিটার পানির দাম ৩৭ টাকা ৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়।

একইভাবে আবাসিক সংযোগে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রতি হাজার লিটার পানির দাম ৯ টাকা ৯২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৪০ পয়সা এবং বাণিজ্যিকে ২৭ টাকা ৫৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা ৩০ পয়সা করা হয় সেখানে।

অর্থাৎ আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ঢাকায় পানির দাম ২৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ২৫ শতাংশ বাড়ছে। আর বাণিজ্যিক সংযোগে ঢাকায় ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ দাম বাড়ানো হয় ওই আদেশে। ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর করা হয়।

এর আগে গত বছর ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো হয়। সে সময় ঢাকায় আবাসিক সংযোগে পানির দাম বাড়ে ১০ শতাংশের মত।