গত রোববার কপিরাইট অফিসের এক রায়ে সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানা পেয়েছেন লেখক শেখ আবদুল হাকিম।
অধিকাংশ বইয়ের মালিকানা হারালেও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের স্রষ্টা হিসেবে চরিত্রটি কাজী আনোয়ার হোসেনের মালিকানায় থাকছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক জিজ্ঞাসায় বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “মাসুদ রানা’ চরিত্রটি তিনিই সৃষ্টি করেছেন; এ বিষয়ে কারো সংশয় নেই। ফলে চরিত্রের একমাত্র মালিকানায় তিনিই থাকছেন। তার অনুমতি ছাড়া কেউ ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ লিখতে পারবে না।”
অধ্যাপক কাজী মোতাহার হোসেনের ছেলে কাজী আনোয়ার হোসেন ১৯৬৬ সালে সেবা প্রকাশনী প্রতিষ্ঠা করে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজ লেখা শুরু করেন; দ্রুতই তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
পরবর্তীকালে কাজী আনোয়ার হোসেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে ‘মাসুদ রানা’ লেখাতেন। তার মধ্যে শেখ আবদুল হাকিমও রয়েছেন।
তবে ‘বাজারজাত করার স্বার্থে’ অন্যদের লেখাগুলো কাজী আনোয়ার হোসেন নিজের নামে প্রকাশ করতেন বলে জানিয়েছে কপিরাইট অফিস।
শুরুতে কোনো আপত্তি না থাকলেও ২০১০ সালে মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানাস্বত্ব দাবি কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন শেখ আবদুল হাকিম।
৯ বছরেও অভিযোগের কোনো সুরাহা না পাওয়ায় গত বছর জুলাইয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
তিন দফা শুনানি, দুই পক্ষের যুক্তি-পাল্টা যুক্তি ও তৃতীয় পক্ষের বক্তব্যের আলোকে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়ায় সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মালিকানা হারান তিনি।
তবে কাজী আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে অনুমতি ছাড়া শেখ আবদুল হাকিমও ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের নতুন কোনো বই লিখতে পারবেন না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কপিরাইট অফিস খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী আনোয়ার হোসেনের তরফ থেকে আপিল করতে একজন আইনজীবী রায়ের অনুলিপি সংগ্রহ করেছেন।
২৬০টি বইয়ের হারানো মালিকানা ফেরত পেতে কপিরাইট বোর্ডে শিগগিরই আপিল করবেন বলে কাজী আনোয়ার হোসেনের পরিবারের পক্ষে তার পুত্রবধূ মাসুমা মায়মুর জানান।
গত রোববার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আইনের পথেই হাঁটব। সেখানেও ন্যায় বিচার না পেলে আমরা হাই কোর্টে যাব। আইনের মাধ্যমেই যা হওয়ার হবে।”
এদিকে আরেক লেখক ইফতেখার আমিনও মাসুদ রানা সিরিজের ৫০টি বইয়ের মালিকানাস্বত্ব দাবি করে কপিরাইট অফিসে একই ধারায় কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সেই অভিযোগও শিগগিরই নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে কপিরাইট অফিস।