অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে পাপুলের স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
তবে পাপুল দেশে ফিরলে আর যেন বিদেশে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে বুধবার পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন সংস্থাটি।
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য।
জনশক্তি রপ্তানিকারক পাপুলকে গত ৬ জুন কুয়েতের মুশরিফ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সে দেশের পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার, অর্থপাচার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগ এনেছে কুয়েতি প্রসিকিউশন।
পাপুলের কুয়েতকাণ্ডের পর দেশে তাকে নিয়ে আলোচনার মধ্যে দুদক তৎপর হয়ে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে সংস্থার উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনকে দায়িত্ব দেয়।
তিনিই এসবিকে চিঠি দিয়েছেন বলে দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বুধবার জানিয়েছেন।
চিঠিতে পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন যাতে বিদেশ যেতে না পারেন, সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।”
এর আগে গত ৯ জুন অনুসন্ধান কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন এই চারজনের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টিআইএন নম্বর, আয়কর রিটার্নসহ ব্যক্তিগত সব নথিপত্র তলব করেছিলেন।
দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, “তাদের কিছু নথিপত্র দুদকে পৌঁছেছে। তবে সব নথিপত্র এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া তাদের বিষয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তথ্য চেয়ে দুদকে থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
সাধারণ শ্রমিক হিসাবে কুয়েত গিয়ে বিশাল সাম্রাজ্য গড়া পাপুল ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লক্ষ্মীপুরের আসনটিতে।
ওই নির্বাচনে ওই আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেষ মূহূর্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালে বিএনপি ঠেকাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ পাপুলের পক্ষে কাজ করেছিলেন।
পাপুল নিজে এমপি হওয়ার পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের কোটায় পাওয়া সংরক্ষিত একটি আসনে তার স্ত্রী সেলিনাকে এমপি করে আনেন।
প্রবাসী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পাপুল, যেখানে তার বড় অঙ্কের শেয়ার রয়েছে।
পাপুলের মালিকানাধীন মারাফি কুয়েতিয়া গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি কাজ করেন বলে কুয়েতে বাংলাদেশি কমিউনিটির ধারণা।
আরও পড়ুন