`লকডাউন’ বাস্তবায়নে সবার তৎপরতা চান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

দেশে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় অঞ্চলভিত্তিক `লকডাউনের’ ঘোষণা হলে তা বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ পেশাজীবীদের নিয়ে কমিটিগুলোকে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2020, 04:57 PM
Updated : 12 June 2020, 04:57 PM

শুক্রবার এলাকাভিত্তিক ‘লকডাউন’ বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক বৈঠক থেকে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো.ফরহাদ হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের একটি কমিটির নিয়মিত বৈঠক এটি।

তিনি বলেন, “মানুষের অভ্যস্ততা না থাকায় লকডাউন পুরো দেশে করা সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে আমরা স্থানীয়ভাবে যেসব জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি সেসব জায়গায় লকডাউন বাস্তবায়নে জোর দিচ্ছি।”

“যে এলাকাটা ভালো আছে সেসব জায়গায় যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে বিষয়টা নিশ্চিত করা। রাজাবাজারে করা হয়েছে। সেখানকার অভিজ্ঞতা কী, সুবিধা অসুবিধা কী, চ্যালেঞ্জগুলো কী আমরা জেনেছি। পরবর্তীতে কোনো এলাকায় লকডাউন জারি করলে কী করতে হবে এসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।”

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু পর সারা দেশে ২৬ মার্চ থেকে অফিস আদালত ও যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে শুরু হয় লকডাউনের বিধিনিষেধে।

কয়েক ধাপে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করার পর ৩১ মে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদে প্রায় সবকিছুই ‘সীমিত’ আকারে খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং দূরত্ব রাখার নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়। 

বিধিনিষেধ শিথিলের পর যখন আবার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে কাজে ফেরা শুরু করলে, তখনও দেশে সংক্রমণ আর মৃত্যু বাড়ছিল প্রতিদিন।

অন্য অনেক দেশে যেখানে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করার পর লকডাউন তোলা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে মহামারীর ওই অবস্থায় যথাযথ প্রস্তুতি ছাড়া লকডাউন তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতীয় কমিটির কয়েকজন সদস্যও প্রশ্ন তোলেন। 

এরপর ১ জুন সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভায় সংক্রমণ বিবেচনায় বিভিন্ন এলাকাকে লাল, হলুদ ও সবুজ এলাকায় ভাগ করে এলাকাভিত্তিক বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়।

সে অনুযায়ী ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকা মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে অবরুদ্ধ রাখা হয়েছে।

সারাদেশে আক্রান্ত ও ঝুঁকির মাত্রার ভিত্তিতে যতটা বড় এলাকায় সম্ভব, জরুরিভাবে লকডাউন করার সুপারিশ করেছে করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, ত্রাণ বিতরণসহ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটিগুলোকে সক্রিয় করার মাধ্যমে লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিলে তা বেশি কার্যকরী হবে বলে মত এসেছে শুক্রবারের বৈঠকে।

“জোনভিত্তিক এলাকাগুলোতে জরুরি সেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করার বিষয়টিতেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে জনপ্রতিনিধিদের অংশ বাড়াতে চাইছি আমরা।”