লিবিয়ায় ‘মানবপাচারে’ একজন গ্রেপ্তার

লিবিয়ায় পাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা তদন্তে  একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2020, 09:37 PM
Updated : 6 June 2020, 09:37 PM

গ্রেপ্তার সুজন মিয়া (২৫) কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জগন্নাপুরের বাসিন্দা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহাদাত হোসেন সোমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে কমলাপুর বাস টার্মিনাল থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

“কিশোরগঞ্জের মোহাম্মদ আলী নামে একজনের ভগ্নিপতি ইছার উদ্দিনকে লিবিয়া নিয়ে নির্যাতন করে অর্থ আদায় করা হয়েছে, কিন্তু এখন তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। তাই মোহাম্মদ আলী শনিবার তেজগাঁও থানায় দশজনকে আসামি করে মানবপাচার ও সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছেন।”

ওই মামলায় সুজন তিন নম্বর আসামি। মামলায় সুজন ছাড়াও তার বাবা হযরত আলী (৫৭), লিবিয়ায় অবস্থানকারী তার ভাই মো. সজীব (২৪) ও সঞ্জিতকে (২২) আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া মামলায় বাকি ছয় আসামি হলেন, লিবিয়ায় অবস্থানকারী কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লক্ষীপুরের তিন ভাই মো. জাফর (৩০), মো. শাকিল (২৫) ও মো. সুজন (২৪)। কিশোরগঞ্জের কাউসার (৩৫), মো. মামুন (২৬) ও দুবাইয়ে অবস্থানকারী আফ্রীন আহমেদ।

মোহাম্মদ আলী মামলায় অভিযোগ করেন, আসামিরা তার ভগ্নিপতি ইছার উদ্দিনকে প্রথমে ৬০ হাজার টাকায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর লিবিয়া পাঠান। পরে চার লাখ টাকা তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়।

“কিন্তু পরবর্তীতে ইছার উদ্দিনকে নির্যাতন করে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন পরিবারের কাছে এবং আসামিরা যোগসাজশে অডিও শোনায় পরিবারকে। কিন্তু এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় এখন ইছার উদ্দিনের কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।”

পুলিশ কর্মকর্তা সোমা বলেন, লিবিয়ার ট্রাজেডিতে এই চক্রটির মাধ্যমে তিনজনের মধ্যে ইছার উদ্দিন ছাড়াও কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মো. বিজয় (২২) নিখোঁজ রয়েছে আর আহত সজল (২৬) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

তিনি বলেন, সুজন আগে লিবিয়া গিয়ে তিন বছর ছিলেন। পরে তার ভাই সজীবকে নিয়ে যান। এখন পুরো পরিবার এই চক্রের সঙ্গে জড়িত।

গত ২৮ মে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাহতে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করে একদল মানব পাচারকারী ও তাদের স্বজনরা। ওই ঘটনায় চার আফ্রিকান অভিবাসীও নিহত হন।

ওই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া একজনের বরাতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উন্নত জীবিকার সন্ধানে ইউরোপ যাওয়ার জন্য লিবিয়ায় দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছিলেন ৩৮ বাংলাদেশি। বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে মানবপাচারকারীরা তাদের ত্রিপোলি নিয়ে যাচ্ছিল।

বৃহস্পতিবার ত্রিপোলি থেকে ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মিজদাহতে ওই দলটি লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়। তখন পাচারকারীরা আরও টাকা দাবি করে।

এ নিয়ে বচসার মধ্যে আফ্রিকার মূল পাচারকারীকে মেরে ফেলা হলে তার পরিবার এবং বাকি পাচারকারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৩০ জনকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আরও ১১ জন আহত হন।