আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম গত ছয় দিন ধরে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে তার ‘ব্রেইন স্ট্রোক’ হওয়ার পর সেখানেই মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়।
অস্ত্রোপচারের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকা নাসিমের শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে গেলে ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ওই বোর্ডে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া।
তিনি শুক্রবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ও ডা. দীন মোহাম্মদসহ ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। উনার অবস্থা সংকটাপন্ন।”
আরও বেশ কয়েক দিন আগে থেকে অসুস্থ মোহাম্মদ নাসিম গত ১ জুন এই হাসপাতালে আসার আগেও একবার করোনাভাইরাস পরীক্ষা করালে ফল নেগেটিভ আসে। ওই সময় তার স্ত্রী এবং একজন গৃহকর্মীর করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে বলে আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানিয়েছিলেন।
পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেও জ্বর-কাশিসহ অন্যান্য অসুস্থতা বাড়তে থাকায় ১ জুন দুপুরে শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন নাসিম। সেখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। রাতে ওই পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
এরপর তিন দিন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও শুক্রবার সকালে তার ‘স্ট্রোক’ হয় বলে নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয় জানান।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে নিহত জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম পঞ্চমবারের মত সংসদে সিরাজগঞ্জের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। পরের বছর মার্চে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তাকে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাসিম এক সঙ্গে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৯ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। পরে মন্ত্রিসভায় রদবদলে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
নাসিমের সময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জাহিদ মালেক এই সরকারে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয় সামলাচ্ছেন।
এখন মন্ত্রিসভায় না থাকলেও দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে আসছেন নাসিম।