‘জবাবদিহিতাহীন স্বেচ্ছাচারের’ লাগাম টানার দাবি টিআইবির

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দেশে ‘জবাবদিহিতাহীন স্বেচ্ছাচারের’ একের পর এক ঘটনা ঘটছে দাবি করে তার লাগাম টেনে ধরার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2020, 02:37 PM
Updated : 30 May 2020, 02:38 PM

ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাকে ঋণ সুবিধা আদায়ের জন্য তুলে নিয়ে গুলি করার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানায়।

ব্যাংক কর্মকর্তাকে হুমকির মামলার আসামিদের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশ ছাড়তে পারার মতো ঘটনাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ‘ব্যবসায়িক দুর্বৃত্তায়ন’ বলে আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি।

ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া এবং অতিরিক্ত এমডি মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ১৯ মে গুলশান থানায় একটি মামলা হয়।

এরপর গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাই ব্যাংককে পাড়ি জমিয়েছেন বলে শুক্রবার খবর প্রকাশ হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বলেছে, “বহুল আলোচিত এই দুই ঘটনার পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে পাচারকৃত অর্থসহ কালো টাকাকে বৈধতা প্রদানের সুবিধা আরও বিস্তৃত করার যে পরিকল্পনার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এমন আশঙ্কা করাটা অমূলক হবে না যে, অনৈতিক ব্যবসায়িক চর্চাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হচ্ছে।”

“অনৈতিক ব্যবসায়িক সুবিধা নিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাতকে প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছেন প্রভাবশালীরা। বরাবরের মতো এবারও যদি তারা দায়মুক্তি পেয়ে যান, সেটা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত শূন্য সহনশীলতা নীতির সরাসরি বরখেলাপ।”

ইফতেখারুজ্জামান (ফাইল ছবি)

ইউনাইটেড হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ রোগীর প্রাণহানির ঘটনার বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনায় বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ সামনে এসেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, যে আইসোলেশন ইউনিটে আগুন ধরেছিল সেখানে দাহ্যপদার্থ নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রগুলো ছিলো মেয়াদোত্তীর্ণ।

“এছাড়া, নিহতরা সবাই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন দাবি তাদের স্বজন ও বিশেষজ্ঞরা নাকচ করে দিয়েছেন। মালিকপক্ষের এমন বিভ্রান্তিকর আচরণ এবং কোনো প্রকার দায় স্বীকারে ব্যর্থতা অবশ্যই অগ্রহণযোগ্য।”

এ অবস্থায় ঘটনার তদন্তে যে কমিটি করা হয়েছে, তা যেন প্রভাবমুক্তভাবে কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিতের আহ্বান জানায় টিআইবি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “সেবার বিষয়টি কেবল সাইনবোর্ড সর্বস্ব হবে, আর ব্যবসায়িক লাভালাভের বিবেচনার কাছে চিকিৎসাপ্রার্থী হেরে যাবেন, গাফিলতির কারণে তাদের প্রাণ যাবে-এটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।”

বুধবার রাতে হাসপাতালটির আঙ্গিনায় করোনা ইউনিটে অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ রোগীর মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নানা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় নানা অব্যবস্থাপনার প্রমাণ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস গঠিত তদন্ত দল।