আদালত ভার্চুয়ালিই চলবে

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর লড়াই দুই মাস বন্ধ থাকার পর অফিস খুললেও আদালত এখনই খুলছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2020, 11:15 AM
Updated : 30 May 2020, 12:09 PM

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাই কোর্ট দুই বিভাগেই গত কিছু দিনের মতো ভার্চুয়াল শুনানি চলবে বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর এক বিজ্ঞপ্তি এই সিদ্ধান্ত জানান।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে আদালত অঙ্গনেও ছুটি ঘোষণা হয়।

দীর্ঘ সাধারণ ছুটির মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের বিচারকাজ চালাতে আইন সংশোধনের পর গত ১১ মে সীমিত পরিসরে ভার্চুয়াল শুনানি শুরু হয় সারাদেশের আদালতগুলোতে।

দুই মাস পর আগামী রোববার থেকে সরকার অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে এখনও সংক্রমণের গতি বেশি থাকায় এজলাস খোলার সিদ্ধান্ত নিলেন না প্রধান বিচারপতি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “উপযুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয়ের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণের সাথে আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত হয় যে দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস (কোভিভ-১৯ ) এর সংক্রমণ রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে আগামী ৩১/০৫/২০২০ তারিখ হতে ১৫/০৬/২০২০ তারিখ পর্যন্ত আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ, ২০২০ এবং অত্র কোর্ট কর্তৃক জারিকৃত প্রাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকার্য পরিচালিত হবে।”

নিম্ন আদালতেও ১৫ জুন পর্যন্ত ভার্চুয়ালি বিচার কাজ চলবে বলে আলাদা আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ভার্চুয়াল আদালত চালুর পর সারাদেশে নিম্ন আদালতে সপ্তাহে দুদিন সেভাবেই শুনানি চলে আসছে।

ভার্চুয়াল শুনানি ১১ বেঞ্চে

ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারের জন্য প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন হাই কোর্ট বিভাগে ১১টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন।

শনিবার হাই কোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।

এই ১১টি ভার্চ্যুয়াল কোর্টে কোন বিচারপতি কী বিচারকাজ পরিচালনা করবেন, বিজ্ঞপ্তিতে তাও উল্লেখ করা হয়েছে।

যে ১১ বিচারক বিচারকাজ পরিচালনা করবেন তারা হলেন- বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন, বিচারপতি জেবিএম হাসান, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল, বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া, বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান।

১৮ বিচারকের ভার্চুয়াল শপথ

সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ১৮ বিচারক শপথ নিয়েছেন।

শনিবার বেলা ৩টায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৮ বিচারককে শপথ পাঠ করান বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইফুর রহমান।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ‘ভার্চুয়াল পদ্ধতি’তে বেলা তিনটায় ১৮ জন বিচারপতিকে শপথ পাঠ করিয়েছেন।

শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর।

বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ১৮ জন অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে এতদিন অস্থায়ীভাবে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই নিয়োগের মাধ্যমে স্থায়ী বিচারক হিসেবে তারা নিয়োগ পেলেন।

তারা হলেস বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার, বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিচারপতি ফাতেমা নজীব, বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার, বিচারপতি মোহাম্মদ আলী, বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীম, বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান, বিচারপতি মো. খায়রুল আলম, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আহমেদ সোহেল, বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

ভিডিও কনফার্নেসর মাধ্যমে বিচারপতিদের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন এটিই প্রথম।

এদিকে বিচারকদের শপথ অনুষ্ঠানের কারণে ফুলকোর্ট সভার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।