ছুটি আর বাড়ছে না, ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে খুলবে অফিস

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ঘরে থাকার মেয়াদ আর না বাড়িয়ে আগামী ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2020, 11:59 AM
Updated : 27 May 2020, 12:48 PM

আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত আকারে চলবে। বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা যাবে না।

নতুন করে সাধারণ ছুটির মেয়াদ না বাড়িয়ে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধিসহ বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে সীমিত পরিসরে অফিস চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন বলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বুধবার জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন দেওয়া এ সংক্রান্ত ফাইল আমরা হাতে পেয়েছি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

“ছুটি বাড়বে না। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত আকারে চালু রাখা হবে। পাশাপাশি নাগরিক জীবনের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”

“আমরা কিন্তু সব ওপেন করে দিচ্ছি না, সীমিত পরিসরে চলবে,” বলেন প্রতিমন্ত্রী।

৩০ মের পর আর ছুটি না বাড়ায় বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির মেয়াদ আপাতত শেষ হচ্ছে।

ছোঁয়াচে এই রোগের বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে সবাইকে ঘরে রাখতে গণপরিবহন বন্ধ করে গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় সাধারণ ছুটি; অনেকটা অন্য দেশগুলোর জারি করা লকডাউনের মতো।

এপ্রিলে পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার পর মে মাসে ঈদের আগে আরও কিছু বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়; যদিও এই সময়েই কোভিড-১৯ সংক্রমণ সবচেয়ে বাড়ছে।

এই অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অনেকে আরও কিছু দিন কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করলেও অর্থনীতিবিদদের অনেকে আবার স্থবির অর্থনীতি চালু করতে সীমিত আকারে সব কিছু খোলার পক্ষে মত জানিয়ে আসছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ এর আগে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউন নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।

ঈদের আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর ইঙ্গিতই ছিল। তিনি বলেছিলেন, “ঝড়-ঝঞ্ছা-মহামারী আসবে। সেগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”

চলাচল বন্ধ, তাই সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে অলস বসে দূরপাল্লার সব বাস

গণপরিবহন-স্কুল বন্ধ থাকছে

অফিস খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি; ফলে এগুলো ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধই থাকছে।

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ মার্চ থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে নির্ধারিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে।

প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে, তবে অনলাইন বা ভার্চুয়াল ক্লাস চলবে।”

৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচলও বন্ধ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মস্থলে যাতায়াতের জন্য যানবাহন ও ব্যক্তিগত যানবাহন চালু থাকবে।

“স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চালাতে পারবে।”

ঢাকা ছাড়া ঠেকাতে গাবতলীতে পুলিশের তল্লাশি চৌকি

চলাফেরায় বিধিনিষেধ থাকছে

অফিস খুললেও এই সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ। নাগরিকদের চলাফেরায় আগের মতোই বিধি-নিষেধ থাকছে বলে জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আগের মতোই রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। এই সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়া যাবে না।

“হাট-বাজার এবং দোকানপাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বেচাবিক্রি চলবে।”  

এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচলে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি জেলার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে চেক পোস্টের ব্যবস্থা থাকবে। জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এটা বাস্তবায়ন করবে।”

সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত ও অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে মসজিদ ও ধর্মীয় উপসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রার্থনা চলবে বলে জানান ফরহাদ।