লকডাউনের ভবিষ্যৎ ‘জানা যাবে বৃহস্পতিবার’

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অফিস-আদালত বন্ধ রেখে ঘরে থাকার মেয়াদ ১৬ মের পর আরও বাড়ানো হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জানাবেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2020, 08:03 AM
Updated : 13 May 2020, 08:03 AM

সেদিন কয়েকটি জেলার জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সময় এই ‘সাধারণ ছুটি’র বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেবেন বলে সরকারের একটি সূত্র বিডিনিউজ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ভিডিও কনফারেন্স করে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিয়ে আসছেন সরকারপ্রধান।

তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকটি জেলার মাঠ প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন সরকারপ্রধান। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৬ মের পরে সরকারি ছুটি বাড়বে কি বাড়বে না, বৃহস্পতিবারের ভিডিও কনফারেন্স থেকে প্রধানমন্ত্রী সেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে নতুন নির্দেশনা দেবেন।”

ছুটি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দিলে এরপর কোন কোন শর্তে সেই ছুটি কার্যকর করা হবে তা জানিয়ে আদেশ জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

১৬ মের পর সরকারি ছুটি বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে হয়েছে কি না জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারাও বৃহস্পতিবারের ভিডিও কনফারেন্সের দিকে নজর রাখবেন।

“সেখান থেকে কোনো নির্দেশনা এলে তার আলোকে আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রজ্ঞাপন জারি করব।”

৪ দিনের জন্য অফিস ‘খুলবে না’

ঈদের আগে মাত্র চারদিনের জন্য অফিস-আদালত আর না খুলে সাধারণ ছুটি বাড়ানো হবে বলেই মনে করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

২৫ মে ঈদ হবে এমনটা ধরে নিয়ে আগামী ২৪, ২৫ ও ২৬ মে রোজার ঈদের ছুটি নির্ধারণ করা আছে। ঈদ ২৬ মে হলে ছুটি একদিন বেড়ে ২৭ মে-তেও ঈদের ছুটি থাকবে।

তার আগে ১৬ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা আছে। ছুটি না বাড়লে ১৭ থেকে ২০ মে চারদিন অফিস খোলা রাখার সুযোগ আছে। ২১ মে শবে কদর এবং ২২ ও ২৩ মে শুক্র-শনিবারের সাধারণ ছুটি। ২৪ মে থেকে শুরু হবে ঈদের ছুটি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়ার প্রসঙ্গ টেনে একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঈদের আগে কয়েক দিনের জন্য অফিস যেন খোলা না হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই সুপারিশ করেছে।

“১৭-২০ মে এই চারদিন এবং ২৫ মে ঈদ হলে ২৭ ও ২৮ মে অফিস খোলা। এরপর ২৯ ও ৩০ মে শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। সবকিছু বিবেচনায় মনে হচ্ছে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হতে পারে।”

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।

পাশাপাশি সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হলে বিশ্বের আরও অনেক দেশের মত বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষও ঘরবন্দি দশার মধ্যে পড়ে, যাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বর্ণনা করা হচ্ছে ‘লকডাউন’ হিসেবে।

এরপর সেই ‘ছুটির’ মেয়াদ কয়েক দফায় বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করা হয়। এপ্রিলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেই আদেশ কিছুটা শিথিল করে এখন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ মার্চ থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে নির্ধারিত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে গেছে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে।

আরও পড়ুন-