কীভাবে হবে বাজেট অধিবেশন?

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রক্ষায় আগামী মাসে বসছে সংসদ অধিবেশন। এই অধিবেশনেই ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2020, 10:29 AM
Updated : 12 May 2020, 10:45 AM

মহামারীর কারণেই এর আগে সংবিধানের নিয়ম রক্ষায় গত ১৮ এপ্রিল ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন বসে জাতীয় সংসদে। যেখানে আইনপ্রণেতাদের বসানো হয় দূরত্ব বজায় রেখে।

কিন্তু অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের ফর্দ যেখানে তুলে ধরা হবে, বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ সেই অধিবেশনটি কেমন হতে যাচ্ছে এবার?

এই প্রশ্নে সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর সোজাসাপ্টা উত্তর- পরিস্খিতি বুঝে সিদ্ধান্ত।

“সবকিছু নির্ভর করছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ওপর। আগামী অধিবেশন কিভাবে আয়োজন করা হবে তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের যেহেতু এই পরিস্থিতিতে একটি অধিবেশন করার অভিজ্ঞতা আছে প্রয়োজনে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব।”

মার্চের ৮ তারিখে দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সরকার যে ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা করেছিল, কয়েক ধাপে বাড়িয়ে তা এখনও বলবৎ আছে।

তবে প্রায় দেড় মাস পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধি মেনে চলার শর্তে কিছু কিছু কল-কারখানা, বিপণী বিতান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়।

এমন পরিস্থিতিতেই ঘনিয়ে এসেছে বাজেটের সময়।

সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোজার ঈদের আগেই অধিবেশন আহ্বান করা হতে পারে।

বাজেট অধিবেশনে সাধারণত দীর্ঘ হয়। অর্থমন্ত্রী বাজেট প্রস্তাবের পর তা নিয়ে পুরো অধিবেশন জুড়ে আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। গত বছর বাজেট অধিবেশন ২১ কার্যদিবসের ছিল।

সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ এপ্রিলের অধিবেশনে মোট ১৩৫ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। চলমান একাদশ সংসদের সপ্তম অধিবেশনে ছিল সেটি। 

করোনাভাইরাসজনিত কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে পূর্ব পরিকল্পনা মতোই তুলনামূলক কম সদস্য বৈঠকে অংশ নেন।

সংসদ বৈঠকের কোরাম পূর্ণ হওয়ার জন্য ন্যূনতম ৬০ জন বা তার কিছু বেশি সদস্য অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন বলে আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। সংসদ কক্ষে আইন প্রণেতাদের আসনের মাঝে দূরত্বও রাখা হয়।

ওই অধিবেশনে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতেও লাগাম টানা হয়। শুধু যাদের প্রয়োজন তাদেরকে সংসদকে ঢুকতে দেওয়া হয়।

সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অনুযায়ী অধিবেশন চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যেহেতু বাজেট অধিবেশন একটু দীর্ঘ হয়, সেজন্য সংসদ সদস্যদের আসনে বসানোর বিষয়েও দূরত্ব বজায় রাখা হতে পারে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারদলীয় এক হুইপ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যদি ভালোর দিকে না যায় তাহলে একটা তালিকা তৈরি করে এমপিদের অধিবেশনে আসতে বলা হবে। সেক্ষেত্রে দুইজন এমপির মধ্যে যাতে যথেষ্ট দূরত্ব থাকে সেটা নিশ্চিত করা হবে। কোরাম পূর্ণ যাতে হয় সেটা অগ্রাধিকারে রাখা হবে।

“অধিবেশনে কার্যদিবস ও আসনের দূরত্ব অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের বৈঠকে থাকতে বলা হবে। একজন হয়তো পরপর দুইদিন সংসদে যোগ দিলেন না। এভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এমপিদের সংসদে আনা হবে।”

ওই হুইপ আরও বলেন, এ বিষয়ে আগামী মাসের শুরুতে সিদ্ধান্ত হবে।  

বাজেটের নথি বিতরণ, সংসদ সদস্যদের জন্য বিভিন্ন নথি সংসদ কক্ষে পৌঁছানো, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মধ্যে নথি বিতরণসহ বাজেট অধিবেশন উপলক্ষ্যে বেশ কিছু প্রস্তুতি নিতে হয় সংসদ সচিবালয়কে।

এসব কাজে কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সংসদের গণসংযোগ শাখার পরিচালক তারিক মাহমুদ বলেন, “অধিবেশন আহ্বান করার পর কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।”