‘মালামালের অভাবে’ দুই রুটেই বিশেষ ট্রেন চলছে না

করোনাভাইরাস সংকটে চলমান লকডাউনের মধ্যে কৃষকের পণ্য পরিবহনের জন্য তিন রুটে যে বিশেষ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল তার দুটিতেই ট্রেন চলছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2020, 05:06 PM
Updated : 4 May 2020, 05:06 PM

‘পর্যাপ্ত পণ্যের অভাবে’ ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেন চলাচল করছে না বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শুধু ঢাকা-ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ রুট পরিবর্তন করে এক জোড়া ট্রেন ঢাকা-ময়মনসিংহ-ভৈরব রুটে চালু রাখা হয়েছে।

রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীবাহী প্রায় প্রতিটি ট্রেনে মালবাহী বগি থাকে। লকডাউনের মধ্যে সেগুলো একসাথে করে ১ মে থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ এবং ঢাকা-যশোর- খুলনা রুটে তিন জোড়া স্পেশাল ট্রেন চালুর কথা ছিল।

এর মধ্যে ১ মে থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চালুও হয়েছিল এক জোড়া ট্রেন। কিন্তু পর্যাপ্ত মালামালের অভাবে সোমবার থেকে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর ঢাকা-যশোর-খুলনা রুটে এই বিশেষ পার্শ্বেল ট্রেন চালুই হয়নি।

অন্যদিকে পূর্বনির্ধারিত ঢাকা-ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ রুট পাল্টে এক জোড়া পার্শ্বেল ট্রেন ঢাকা-ময়মনসিংহ-ভৈরব রুটে চলাচল করছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ছোঁয়াচে রোগ কোভিড-১৯ মহামারী ঠেকাতে গত মার্চ ২৬ মার্চ সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে লকডাউনে যাওয়ার আগেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছিল।

অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা হলেও কন্টেইনার ও মালবাহী ট্রেন চলবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে ওই ট্রেন চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছিল।

এরপর তিন দফায় বেড়ে সাধারণ ছুটি ১৬ মে পর্যন্ত বেড়েছে। এই সময়ে গণপরিবহন চলছে না। তবে লকডাউনের এক মাস পর শিল্পাঞ্চলগুলোতে পোশাক কারখানাগুলো শর্তসাপেক্ষে খুলেছে। এর মধ্যেই বিশেষ পার্শ্বেল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ২৯ এপ্রিল রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “এখন চিন্তা করতেছি যেগুলো লাগেজ ভ্যান আছে, যেগুলো দিয়ে আমরা মালামাল পরিবহন করি, যেমন খাদ্য-দ্রব্য, শাকসবজি, ধান পরিবহনে যদি লাগে, সেগুলো চলাচলের চিন্তাভাবনা করছি।

“ব্যবসায়ীরা যদি এগুলো ব্যবহার করতে চায় তাহলে আমরা চালু করব। সেভাবে যদি হয় তাহলে কাল থেকেই এ ধরনের ট্রেন চালু করব।”

এর পরের দিন ৩০ এপ্রিল রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ সফিকুর রহমানের স্বাক্ষরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতে লকডাউন অবস্থায় কৃষকের উৎপাদিত পণ্য, শাক-সবজি, খাদ্য ও পচনশীল সামগ্রী পরিবহনের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা এবং খুলনা-ঢাকা-খুলনা রুটে তিন জোড়া পার্শ্বেল স্পেশাল ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা ১ মে থেকে কার্যকর হবে।”

এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ার বিষয়ে সোমবার সফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে তিন জোড়া পার্শ্বেল স্পেশাল ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু যারা পণ্য বহন করবে তাদের চাহিদা না থাকায় পর্যাপ্ত পণ্যের অভাবে এই সিদ্ধান্ত এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। এখন এক জোড়া ট্রেন ঢাকা-ময়মনসিংহ-ভৈরব রুটে চলাচল করছে।”

তবে বিশেষ পার্শ্বেল ট্রেন চলাচলের ওই সিদ্ধান্ত বাতিলও করা হয়নি বলে জানান তিনি।