অক্সিজেন সরবরাহে ঘাটতি নেই: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

কোভিড-১৯ আক্রান্তদের জন্য দেশের কোনো হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের কোনো ‘ঘাটতি বা সঙ্কট নেই’ বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2020, 12:17 PM
Updated : 7 June 2020, 06:35 AM

সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে শনিবার অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ বিষয়ে কথা বলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল ও আইসোলেশন ইউনিটে অক্সিজেন সরবরাহে কোনো ঘাটতি নাই। যেসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ ও পুরনো তথ্য।“

নাসিমা সুলতানা জানান, সারা দেশে সকল উপজেলায় মোট ১০ হাজার ৩৯৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে এখন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতাল বাদে দেশের আটটি বিভাগে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে ১৩ হাজার ৭৪৫টি।

“ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালেও অক্সিজেন সিলিন্ডারের কোনো ঘাটতি বা সঙ্কট নাই।”

তিনি বলেন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ৪৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। তবে সেখানে কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু নেই।

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ১২০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ১২টি মিনি ফোল্ড কানেকটর আছে। অনেক মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালে কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা আছে বলেও জানান নাসিমা।

তিনি বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে আরও ৩ হাজার ৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেগুলো দ্রুত দেশে চলে আসবে। এছাড়া পুরনো সিলিন্ডারগুলোও ‘রিফিল’ করা যাবে।

রাজধানীর কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য হাসপাতাল এবং বেসরকারি তিনটি হাসপাতালের মধ্যে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীতে সাজিদা ফাউন্ডেশনের হাসপাতালকে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

দুদিন আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের বেশিরভাগেই রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় সিলিন্ডার থেকে। মাত্র দুটি হাসপাতাল- কুয়েত-মৈত্রী আর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সীমিত আকারে সেন্ট্রাল অক্সিজেন স্টোরেজ সিস্টেম রয়েছে, যেখান থেকে নির্ধারিত লাইনের মাধ্যমে আইসিইউতে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।

“নিরবচ্ছিন্নভাবে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন স্টোরেজ সিস্টেম ছাড়া ভেনটিলেটর কোনো কাজে লাগবে না। যেসব হাসপাতালের সেন্ট্রাল স্টোরেজ সিস্টেম থেকে ভেনটিলেটরের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়, সেখানেই শুধু করোনা রোগীর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে এ সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।”

পত্রিকাটি লিখেছে, “একটি ভেনটিলেটরের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে রোগীকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হলে ৫০ পিএসআই প্রেসার প্রয়োজন, যা বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোয় ব্যবহৃত ১০টি সিলিন্ডার একত্র করলে পাওয়া সম্ভব। তবে তাও মাত্র প্রথম ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। এরপর আর ভেনটিলেটরে অক্সিজেন আসবে না।”

এ বিষয়ে কথা বলতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক আমিনুল হাসানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।