বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলছেন, “সত্যিই যাদের লস হবে তাদের জন্য বিকল্প অনেক কিছুই করা সম্ভব। বিশেষ পরিস্থিতিতে সকলের জন্য প্রণোদনার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাভাবনার মধ্যে রয়েছে।”
সাধারণ প্রার্থীরা ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ৩২ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে নিয়োগের আবেদন করতে পারেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য বয়স শিথিল করা হলে তা বিজ্ঞপ্তিতেই বলে দেওয়া হয়।
গত ডিসেম্বরের পর সরকারি কর্ম কমিশন চাকরিতে নিয়োগের নতুন কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি। এদিকে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর বিস্তার বাড়তে থাকায় মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে সব কিছুই বন্ধ হয়ে আছে। এই পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হতে যাচ্ছে বলে ইতোমধ্যে আভাস মিলেছে।
পড়াশোনা শেষ করে যারা চাকরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের অনেকেই চাকরিতে ঢোকার ন্যূনতম বয়স শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।
“পরিস্থিতি অনুযায়ী সরকারি ছুটি বাড়ানো হচ্ছে, অন্যান্য বিষয়েও একটা দিকনির্দেশনা আসবে। তখন এসব চিন্তাভাবনা থাকবে। এখন তো আমরা বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
এ পরিস্থিতিতে কী করা উচিৎ সে বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছেও মতামত প্রত্যাশা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরামর্শ থাকবে, যে সময়টুকু নষ্ট হল সেই সময় থেকেই বয়সটা ধরা। ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ হয়েছে... ২৫ মার্চ পর্যন্ত তার বয়স ৩০ বছর হতে হবে- এ রকম একটা শর্ত থাকলেই তো হয়ে যায়।”
তবে পরিস্থিতি কীভাবে কোন দিকে যাবে, তা যেহেতু এখনও বোঝা যাচ্ছে না, তাই সময় এলেই বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলেন ফরহাদ।
তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতি কতদিন চলবে সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। চাকরির বিজ্ঞপ্তি কবে দেওয়া যাবে… হয়ত মে মাসও চলে যাবে। হয়ত জুন মাস থেকে একটা স্বস্তিকর অবস্থায় আসতে পারব।
“সেক্ষেত্রে আমার মনে হয়, যদি এ রকম কোনো আমাদের লস অব টাইম হয় বা ওয়েস্ট অব টাইম হয় সেটা কমপেনসেট করার সুযোগ থাকবে, আমরা তখন বলে দিতে পারব। সেটা আমরা প্রধানমন্ত্রীকেও পিএসসির মাধ্যমে বলতে পারব।”
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য, “সকলের জন্য প্রণোদনা... আমাদের এই বিশেষ পরিস্থিতির কারণে যাকে যতটুকু কমপেনসেশন দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর মানসিকতা ও চিন্তাভাবনার মধ্যে জিনিসগুলো আছে।”
পিএসসি গত ৩১ ডিসেম্বর সব শেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তার আগে ৯ ডিসেম্বর দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় কমিশন। গত বছরের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এখনও প্রিলিমিনারি পরীক্ষাই নিতে পারেনি পিএসসি।
আর ৩১ ডিসেম্বরের পরে কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার আংশিক অর্থাৎ প্রিলিমিনারি, লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষার ফল পিএসসি প্রকাশ করলেও করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে বেশিরভাগ নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আগের বিজ্ঞাপিত পদগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও সময় লাগবে। অন্যদিকে চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় প্রতিদিনই অবসরে যাচ্ছেন সরকারি চারকিজীবীরা।
সরকারি চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন করে আসছে বিভিন্ন সংগঠন। তবে শেষ পর্যন্ত তা সরকারের সাড়া পায়নি।
এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে মহামারীর মধ্যে যাদের সরকারি চাকরির বয়স শেষ হবে তাদের বিষয়টি বিচেনায় না রাখলে কিছু চাকরিপ্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে স্বীকার করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ।
ভবিষ্যতে সব চাকরিপ্রার্থীর কথা বিবেচনায় রেখেই চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।