মানুষ সচেতন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে: প্রধানমন্ত্রী

স্বাস্থ্যবিধি না মানায় মানুষ নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ আরেকটু সচেতন হয়ে নিজেদের সুরক্ষিত রাখলে কোভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2020, 06:57 AM
Updated : 20 April 2020, 09:38 AM

সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জেলার কর্মকর্তাদের কোভিড-১৯ মহামারী প্রতিরোধে বিভিন্ন নির্দেশনা দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সারা বিশ্বে যেখানে হাজার হাজার লোক প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশে এপ্রিল মাসের আজকে ২০ তারিখ, এখন পর্যন্ত আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। আমি মনে করি যে আমাদের জনগণ যদি আরেকটু সচেতন থাকেন, আরেকটু নিজেদের সুরক্ষিত রাখেন তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণর করা সহজ। আমি আশা করি সবাই করবেন।”

ছবি: পিআইডি

নভেল করোনাভাইরাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যু দুঃপ্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “ইউকে, ইউএস, ইউরোপিয়ান দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশে যে পরিমাণ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে এটা ভয়াবহ। একমাত্র ইউএসএতেই আমাদের বাঙালি প্রায় দেড়শজনের মতো মৃত্যুবরণ করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে এ রকম একটা উন্নত দেশে থেকে এভাবে আমাদের বাঙলিরা মারা যাবে।

“ইউএসএতে যেমন মারা গেছে ইউকেতেও আমাদের এমনকি বাঙালি ডাক্তারসহ অনেকেই সেখানে মৃত্যুবরণ করেছে। আর এভাবে অন্যান্য দেশেও আমরা যদি দেখি বাঙলি অনেকেই মারা যাচ্ছে। সেই তুলনায় আমি যদি বাংলাদেশের কথা বলি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮৮৫ জনের পরীক্ষা হয়েছে। দুই হাজার ৪৫৬ জনের ভেতরে এই রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে আর ৯১ জনের মতো এ পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করেছে। এটাও দুঃখজনক। কেউ মারা যাক এটা আমরা চাই না।”

নতুন এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সবাইকে নিজেকেই সুরক্ষিত করতে হবে। আমরা যদিও চেষ্টা করে যাচ্ছি তবুও আমরা দেখি আসলে আমাদের দেশের অনেকেই এটা ভালোভাবে মানতে চান না, যার ফলে সংক্রমিত হয়ে যাচ্ছেন।

“তবে খুব দোষ দেয়ারও কিছু নেই, কারণ এমন একটা ভাইরাস যেটার কোনো লক্ষণও বোঝা যায় না, দেখাও যায় না। শুধু আক্রান্ত হলে পরীক্ষা করলে তখন বোঝা যায়, অথবা যখন খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন বোঝা যায়।”

 

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম এপ্রিল মাসটা আমাদের জন্য একটু কষ্টের মাস হবে। কারণ এপ্রিল মাসে একটা প্রাদুর্ভাব ছড়াতে পারে, কারন এর একটা ট্রেন্ড আছে। আমরা অন্যান্য দেশের অবস্থাটা যদি দেখি তাহলে এটাই দেখা যায় একবার যদি শুরু হয় তখন এটা সংক্রমিত হতে থাকে। সেক্ষেত্রে বহু আগেই সতর্ক করেছি যে এপ্রিল মাসে সবাইকে একটু আরও সাবধানে থাকা দরকার।”

নতুন ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। ‍ভিডিও কনফারেন্সের গণভবন প্রান্তে অন্যদের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।