ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রশাসনের ব্যর্থতায় ঝুঁকিতে অনেকে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ধর্মীয় নেতার জানাজায় বিপুল জনসমাগম  ঠেকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে অনেকেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2020, 12:02 PM
Updated : 19 April 2020, 12:09 PM

কোভিড-১৯ নিয়ে রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে যুক্ত হয়ে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি বিশেষ জমায়েত লক্ষ্য করলাম, সেখানে হাজার হাজার লোক জানাজায় শরিক হয়েছে।  এ সময়ে এ ধরনের জমায়েত খুবই ক্ষতিকর হয়েছে।

“আশঙ্কা করি, অনেক লোক হয়তোবা আক্রান্ত হয়েছে। এ ধরনের দায়িত্বহীন কাজ হওয়া উচিত হয়নি। এখানে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে- আমরা এ ধরনের মনোভাব পোষণ করি। ”

জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের জামিয়া রহমানিয়া বেড়তলা মাদ্রাসায় হাজার হাজার মানুষ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় অংশ নেন।

সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে গিয়ে মানুষ যোগ দেয়। মানুষের ভিড় মাদ্রাসার সীমানা ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গিয়ে পৌঁছায়।কিন্তু মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এই আয়োজন ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি।

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক ছোঁয়াচে এই মহামারী থেকে রক্ষা পেতে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্য অনেক দেশের মত বাংলাদেশ সরকারও প্রায় সবকিছু বন্ধ করে সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছে।

 

সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আগেই। অর্থাৎ, এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় যেতে পারার কথা না।

এমন পরিস্থিতিতে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে এতো মানুষ সেখানে কীভাবে জমায়েত হলেন তা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সমালোচনা চলছে।

মানুষকে ঘরে রাখতে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকার সাধারণ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। কিন্তু নির্দেশনা না মেনে জনগণ বেরিয়ে আসছে সড়কে। রাতের আধারে লুকিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াতের খবরও আসছে গণমাধ্যমে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিনিয়ত যেসব তথ্য আসছে তাতে সেসব এলাকায় মূলত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে যাওয়া আক্রান্তরাই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

“এখনও তারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন উপায়ে লুকিয়ে এই কাজটি করছে। এবিষয়ে প্রশাসনের বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন।”

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওই জনসমাগম ঠেকাতে ব্যর্থতার জন্য সরাইল সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি), সরাইল থানার ওসি ও পরিদর্শককে (তদন্ত) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিকে ২২ এপ্রিল প্রতিবেদন দিতে বলেছে পুলিশ সদরদপ্তর।