করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে হাসপাতালগুলোতে অন্য রোগী কমে যাওয়া, রোগ পরীক্ষার ল্যাবগুলো বন্ধ থাকায় এই সেবা এখন নিষ্ক্রিয়প্রায়। অথচ ১৫ দিন আগেও বেসরকারি এসব অ্যাম্বুলেন্সকে দেখা গেছে রোগী নিয়ে সাইরেন বাজিয়ে ছুটতে।
শুক্রবার কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মালিবাগের ইবনে সিনা ডায়গানস্টিক, মগবাজারের রাশমনো স্পেশালাইজড হাসপাতাল, আদ-দ্বীন হাসপাতাল এবং ইস্কাটনে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
চালকদের কেউ ১২ দিনে দুইজন, কেউ এক সপ্তাহে চারজন রোগী পেয়েছেন। কেউবা ১১ দিনে কোনো রোগীই পাননি বলে জানান।
“প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসে কাজ করি। এইভাবে চললে আমরা পরিবার নিয়া চলমু কেমনে?”
ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের চালক মফিজ মিয়া বলেন, “তিনদিন আগে বাসাবো থেকে একজন রোগী নিয়ে চার হাসপাতালে গেছি, সেই রোগী ভর্তি হতে পারে নাই।
“পরে মিরপুরের একটি হাসপাতালে সেই রোগী ভর্তি হয়েছে অনেক বলে-কয়ে। করোনার কারণে দেখবেন বেশিরভাগ হাসপাতালে কোনো রোগীই ভর্তি করতেছে না। সবাই আছে করোনা আতঙ্কে।”
শুক্রবার সকাল ১১টায় ইস্কাটনের কাছে রাস্তায় পাঁচি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স দেখা যায়।
সেখানে রবিউল আলম রবি নামের একজন চালক বলেন, “স্যার টেনশনে ঘুম হয় না। রোগী পাই না। যে আকাল পড়ছে কিভাবে সংসার চালামু? ট্রিপ না পাইলে মালিক তো আর বইসা বইসা খাওয়াইব না?”
চালকদের কথার সত্যতা মিলল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, রাশমনো স্পেশালাইজড হাসপাতালে গিয়ে। কোনো হাসপাতালেই আগের মতো রোগীর ভিড় নেই। করোনাভাইরাসের কারণে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে হাসতাপাল থেকে অধিকাংশ রোগী চলে গেছে, নতুন রোগী ভর্তিও একেবারে কম।
আদ-দ্বীন হাসপাতালের সামনেও অ্যাম্বুলেন্সের সারি। ১৫ দিন আগেও এমন দৃশ্য দেখা যায়নি বলে জানালেন হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কর্মী সুলতানা পারভিন।
“এই হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স পর্যাপ্ত। অন্য অ্যাম্বুলেন্সে আসতে হয় না। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে সেভাবে অ্যাম্বুলেন্সের দৌড়াদৌড়ি দেখি না। কী যে হইল বুঝি না, কবে যে বিপদ কাটব কে জানে?”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, পঙ্গু হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট, শিশু হাসপাতালের মতো সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স নেই। ওইসব হাসপাতালে ব্যাপক সংখ্যক রোগী ভর্তি হয় বলে সেখানে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের গাড়ি থাকে প্রচুর। কিন্তু এখন রোগীর স্বল্পতায় সেই অবস্থা আর নেই বলে জানিয়েছেন চালকরা।