পুরান ঢাকার আরও ১৫টি ভবন অবরুদ্ধ

করোনাভাইরাসের রোগী পাওয়ায় পুরান ঢাকার বংশাল ও লালবাগে আরও ১৫টি ভবন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2020, 04:12 PM
Updated : 8 April 2020, 06:20 PM

বুধবার এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা। এর এক দিন আগে পুরান ঢাকার চকবাজারের দুটি গলিও অবরুদ্ধ করা হয়।

বংশাল থানাও ওসি শাহীন ফকির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আলী নেকীর দেউরীর মসজিদ কমিটির এক নেতা নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার স্ত্রীরও জ্বর রয়েছে। ওই এলাকার নয়টি ভবন ‘লকডাউন’ করা হয়েছে।

এদিকে লালবাগ রোডের এক যুবক নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

লালবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসলাম হোসেন বলেন, “লালবাগ রোডের ৬টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।”

চকবাজারের খাজে দেওয়ান লেইনে মসজিদ কমিটির যে সহসভাপতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল, তিনি বুধবার প্রথম প্রহরে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই এলাকায় আরও একজন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ওই এলাকায় তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন।”

উর্দু রোডের একটি ভবনেও পয়ঁষট্টি বছর বয়সী এক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই ভবনটি আগেই অবরুদ্ধ করে পুলিশ।

ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই কয়েকটি ভবন ছাড়াও আগেই থেকে সুত্রাপুরে চারটি ভবন, ইসলামপুরে একটি ও বাবুবাজারে একটি ভবন লকড রয়েছে।”

ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওয়ারীতে ছয়টি ভবন লকডাউন করা রয়েছে।

সবুজবাগ ও মুগদায় নতুন রোগী নেই জানিয়ে মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত ই-কমিশনার মোনালিসা বেগম বলেন, “আগে থেকে যে নয়টি ভবন লকডডাউন ছিল, তাই রয়েছে।”

শাহজাহানপুর থানার ওসি শহীদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উত্তর শাহজাহানপুরে একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় ‘দ্বীপ শিখা’ গলি অবরুদ্ধ করা হয়েছে।

পল্টন থানার ওসি আবু বকর সিদ্দীক বলেন, পুরানা পল্টনে দুজন রোগী থাকায় মঙ্গলবার থেকেই দুটি ভবন ‘লকড ডাউন’ আছে।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, তার বিভাগে ৬টি ভবন লকড ডাউন ছিল। এখন তিনটি ভবন লকডাউনে রয়েছে।

ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, আইইডিসিআরের নির্দেশে একটি ভবন লকড ডাউন রয়েছে উত্তরা এলাকায়।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন আপডেট এখন নেই। তবে পুরনো যে কয়টি লকড ছিল, তাই আছে।”

আগে থেকে নয়টি ভবন লকডাউনে রয়েছে বলে তিনি জানান।

ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, “শুধু টোলারবাগই পুরো একটি এলাকা লকড ডাউন রয়েছে। এছাড়া মিরপুর ১,১০, ১১,১৩, ও শাহআলীবাগে বিভিন্ন ভবন বা ফ্ল্যাট লকডাউন করা হয়েছে।”

ডিএমপির রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আব্দুল্লাহহিল কাফি বলেন, ধানমন্ডি ৬ নম্বর রোডে দুজনের শরীরের নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাই দুটি ভবন আর শংকরে একটি ভবন লকডাউন করা রয়েছে।

নতুন রোগী রয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইইডিসিআর এখনও দেয়নি।

গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ বলেন, আইইডিসিআর পুলিশকে বলেছে, কোনো রোগীর জন্য ভবন বা এলাকা লকডাউন করতে হলে তা তারাই (আইইডিসিআর) জানায়।

কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে যে এলাকায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে, সে এলাকা পুরোপুরি লকডাউন করার নির্দেশনা ইতোমধ্যে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাতে ছোঁয়াচে রোগটি আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে।

সংক্রমণের শুরুর দিকে ঢাকায় মিরপুরের টোলারবাগে রোগী পাওয়ার পর ওই এলাকাটি আগেই লকডাউন করা হয়েছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৫৪ জনের মধ্যে ৩৯ জনই ঢাকার বলে জানিয়েছে আইইডিসিআর।