বৃহস্পতিবার সকালে বেড়ীবাঁধে ঢাকা উদ্যানের আলীম মিস্ত্রীর রিকশার গ্যারেজ ও পাশের একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যারেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে খোঁজ নিয়ে রাজধানীর অন্য এলাকাতেও একই চিত্র মেলে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর শুরুর রাস্তায় চলাচলে কড়াকড়ি করা হলেও পরে একটু ঢিল পড়ে। এই সুযোগে মানুষ অসতর্ক হয়ে পড়েছে বলে কড়া পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। কিন্তু দুঃস্থ মানুষদের পাশেও রয়েছেন তারা।
আদাবরের এক রিকশা গ্যারেজের মালিক আক্তার মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার গ্যারেজে ৫০টির বেশি রিকশা থাকে। গত চার-পাঁচ দিন ১০/১২টি করে রিকশা বের হলেও বুধবার রাতে পুলিশ এসে গ্যারেজ বন্ধ রাখতে বলেছে।
তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, পুলিশ এখন স্বাস্থ্য জনসচেতনতার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব রক্ষার জন্য যতটুকু প্রয়োজন পুলিশ সেটাই করছে। তাই এলাকার রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশার গ্যারেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শাহআলী থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া জানান, গ্যারেজগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে জরুরি প্রয়োজন হলে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
লালবাগ থানার ওসি কেএম আশরাফউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফের ডটকমকে বলেন, তার এলাকায় রিকশা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুয়েকটি রিকশা বের হলেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশের একটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে বলে তিনি জানান।
একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন ঘরের বাইরে বের না হয় সেবিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যা প্রয়োজন পুলিশ তাই করছে। কেউ যেন অকারণে কোনো অজুহাতে রিকশা বের করতে না পারে সে ব্যাপারে নজর রাখা হচ্ছে।
“আমরা মানবতার দিকটাও দেখছি। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার তৈরি খাবার প্যাকেট পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি থানায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।”
তবে জমায়েত করে বা স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে এমন কোনো আয়োজন করে কেউ যাতে সহায়তা বিতরণ না করেন সে ব্যাপারে সতর্ক করেন এই পুলিশ শীর্ষ কর্মকর্তা।
মোহাম্মদপুরের বছিলার রিকশায়ালা সাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বুধবারের মতো তিনি বৃহস্পতিবারও সকাল ১১টার দিকে গিয়েছিলেন কিন্তু গ্যারেজ বন্ধ পান। আজ তিনি পরিবারের সদস্যদের কী খাওয়াবেন তা নিয়ে চিন্তিত তিনি।
বাঁশবাড়ি এলাকার কিছু রিকশাওয়ালা এবং ছিন্নমূল কিছু মানুষ মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে খাবার সামগ্রী পেয়েছেন বলে কয়েকজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন থানা পুলিশ নিজ নিজ এলাকায় রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা গ্যারেজ মালিক বা গাড়ীর মালিকদের বলে দিচ্ছেন তারা যেন চালকদের অন্তত এক সপ্তাহ চাল ডালের ব্যবস্থা করে।
পাশাপাশি পুলিশও এসব অসহায় মানুষদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিদিন থানাগুলোতে বিতরণের জন্য ৭০ জনের একবেলা খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।