ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণে পুরনো ছবি ব্যবহার হচ্ছে: পুলিশ

করোনাভাইরাস মহামারী ঠেকানোর এই সময়ে পুরনো এবং ‘ফটোশপ করা’ ছবি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ণ করে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ এসেছে বাহিনীর পক্ষ থেকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2020, 02:51 PM
Updated : 30 March 2020, 02:51 PM

সোমবার পুলিশ সদর দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই অভিযোগ জানিয়ে এসব ছবি ইন্টারনেটে না ছড়িয়ে বরং সতর্ক থাকতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সময়ে একটি দুষ্ট চক্র অতীতের বিভিন্ন সময়ের পুরাতন ছবি ও ভিডিও, যেগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে সেই সময়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা এডিট করে বা কৌশলে ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে পোস্ট দিচ্ছে।

“২০১১ সালে পুলিশ কর্তৃক বিএনপি-জামাতের অগ্নি-সন্ত্রাস দমনের ছবিও ফটোশপ করে ব্যবহার করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সেগুলো সহজেই বিশ্বাস করে তার বিপরীতে তাদের উষ্মা প্রকাশ করছেন এবং তা শেয়ার করছেন।”

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এ ধরনের মিথ্যাচারের ফলে পুলিশের প্রায় শতভাগ সদস্য, যারা দেশ ও জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও করোনাভাইরাস আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারসহ নানা উপায়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে চলেছেন, তারা মানসিকভাবে ‘ডিমোটিভেটেড’ হচ্ছেন।”

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তার ঠেকাতে সরকার সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেওয়ার পর তা মানাতে বেশ কয়েকটি স্থানে পুলিশের বলপ্রয়োগের ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় আসার পর সমালোচনায় পড়ে এই বাহিনী।

তবে সেসব ঘটনায় ত্বরিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “করোনার বিস্তাররোধে সারাদেশে লক্ষ কোটি মানুষের সাথে পুলিশের ইন্টারঅ্যাকশন বা সাক্ষাৎ হচ্ছে প্রতিদিন। এর মধ্যে গুটিকয় ঘটনা বা ইন্টারঅ্যাকশনের সময় পুলিশের কতিপয় সদস্যের বিরুদ্ধে অনাকাঙ্খিত বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে এবং এই বিষয়গুলো নিউজ মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য যে কোনো উপায়ে পুলিশ সদর দপ্তরের দৃষ্টিতে আসা মাত্রই মাঠ পর্যায়ে ইউনিট কমান্ডারদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“পুলিশের মহাপরিদর্শক ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও বার্তায় এবং মোবাইল ফোনে অপারেশনাল সকল কমান্ডারের সাথে কথা বলেছেন। অপারেশনাল ইউনিট কমান্ডারগণও মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তাদেরকে একইভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর ফলে, একই ধরনের ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে পুলিশ সদরদপ্তরের দৃষ্টিতে পড়েনি কিংবা জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য কোনো প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় এমন কোনো সংবাদ আমাদের চোখে পড়েনি। কিন্তু তারপরও কিছু নিউজ মিডিয়ায় নতুন করে পুরাতন অভিযোগগুলো নিয়ে এমনভাবে নিউজ ছাপা হচ্ছে, যাতে মনে হচ্ছে এখনও বলপ্রয়োগ অব্যাহত রয়েছে।”

এরপরও এই ধরনের অপপ্রচার অব্যাহ থাকলে ‘উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সাইবার টিমগুলোও গুজব ও মিথ্যা রটনাকারীদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে।”

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই সঙ্কট মোকাবেলায় বাহিনীর দুই লক্ষাধিক সদস্য বিভিন্ন প্লাটফর্মে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।