রোববার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিষয়াবলী নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলনের বদলে অন্য কোনো পদ্ধতি নেওয়া যায় কি না প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ আমাদের ইচ্ছা ছিল শুধু দুই-একজন ক্যামেরাম্যান ডেকে অনলাইনের মাধ্যমে করা যায় কি না। আমরা সেটার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ইতোমধ্যই আপনারা সকলে চলে এসেছেন, তবে ভবিষ্যতে আমরা সেভাবেই করব।”
সবাইকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “যতটুকু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন আমরা সেটুকুই নেব। অনলাইনে বা ভিডিওি কনফারেন্সে করব। এজন্য যদি আপনাদের সহায়তার প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা বিএসআরএফে (সচিবালয়ে কর্মরত সংবাদিকদের সংগঠনের অফিসকক্ষ) যদি একটা ভিডিও মনিটর বসানো যায় বা কী করা যায় এ ব্যাপারে আলোচনা করে জানালে আমরা সহায়তা করব।“
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম না করা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলাসহ নানা পরামর্শ যখন সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে, তখন বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের শনিবারের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ে একটি গুজব প্রতিরোধ সেল আছে এবং সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আরও একটি সেল গঠন করা হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আজ সে বিষয়ে এাটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সেলে সকল সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি থাকবে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কাজ করবে। এই সেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যে টাক্সফোর্স গঠন করা হয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই সেল কাজ করা শুরু করবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তারা এ ধরনের পরামর্শ দেয়নি। ভবিষ্যতে কী করতে হতে পারে বা হতে পারে সে আশঙ্কা নিয়ে আলোচনা করেছে। কিন্তু এ মুহূর্তে সব কিছু লক ডাউন করে দেওয়ার মতো পরামর্শ তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি বলে তারা জানিয়েছে।
“পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে বহির্বিশ্বের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন হলে নেওয়া হচ্ছে।”
তথ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “তথ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে দেশের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব- ব্যক্তিদের দিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন তৈরি করে বিটিভির মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। অন্যান্য টিভিতেও পাঠানো হয়েছে। সেখানেও প্রচার করা হচ্ছে।”
ঢাকা-১০ আসনের শনিবারের উপনির্বাচন নির্বাচনের ধারাবাহিতকা রক্ষার জন্য করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “ঢাকায় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুবই নগণ্য ছিল। এটি স্বাভাবিক, আমরা সেটি ধারণা করেছিলাম। জনগণ অনেক সচেতন ও আতঙ্কিতও বটে, এ কারণে গতকালকে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। এছাড়া ইভিএমে সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়, আর একজনের ভোট যে অন্যজনে দিতে পারে না সেটির প্রমাণ হচ্ছে কালকে অত্যন্ত কম সংখ্যক ভোট কাস্ট হয়েছে। যারা ভোট কেন্দ্র গেছেন তারাই কেবল ভোট দিতে পেরেছেন। সেটি আবারও ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে।”
দল মত পথ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে মানুষকে জাতিকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এ সময় আমি সবিনয়ে বিএনপির সকলকে অনুরোধ জানাব, সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াবে। রাজনীতি করার সময় এটি নয়। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ জাতি ও মানুষের পাশে দাঁড়াই। রাজনীতি করার সময় এটি নয়।”
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মাঝে বেসরকারি টেলিভিশন এসএ টিভির ৩২ জন সংবাদকর্মীকে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এমন সময়ে চাকরিচ্যুত করার বিষয়টি দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। আমি আজকেই জানলাম। আরও বিস্তারিত জেনে কী করা যায় সেটি করা হবে। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”