সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সীমিত করার আহ্বান

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় সতর্কতা ও কড়াকড়ির মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি সব ধরনের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সীমিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2020, 03:53 PM
Updated : 19 March 2020, 03:53 PM

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার বিকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “আমরা চাই দেশবাসী নিরাপদে থাকুক। দেশে যাতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সকল মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী একনেক মিটিংয়ে অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনার আলোকে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও আমরা কাজ করব।”

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের পাশাপাশি বেশ কিছু নির্দেশনাও তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।


>> স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সকল বিভাগের সকল সংস্থার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

>> স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অফিসে সমন্বিত একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। সেখান থেকে পুরো দেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।

>> ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সব ফ্লাইট আগেই বাতিল করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্যের ফ্লাইট চালু ছিল, সেটাও আগামী এক দুই দিনের মধ্যে বন্ধ করা হবে।

>> সরকার সব ধরনের পর্যটন নিরুৎসাহিত করতে, আপাতত বেড়ানো বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে।

>> ক্লাব, সিনেমা হল আগেই বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। সব ধরনের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানও সীমিত করতে বলছে সরকার।

>> বড় আকারে বিয়ের অনুষ্ঠান না করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে, করতে হলেও তা যেন সীমিত আকারে হয়।

>> বাস, রেল ও লঞ্চে যাত্রী পরিবহনও সীমিত করতে বলা হচ্ছে।

>> যাদের জ্বর বা অসুস্থতা রয়েছে, তাদের কোনো ধরনের যানবাহনে ভ্রমণ না করতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

>> নির্বাচনী প্রচারে বড় বড় মিছিল বন্ধ করার বিষয়ে বলা হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে।

>> বিদেশ থেকে প্রবাসীরা এসে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না। তারা সঠিক তথ্যও দিচ্ছে না। কেউ কেউ যত্রতত্র ঘোরাফেরা করছেন, আবার কেউ তথ্য গোপন করে লুকিয়ে থাকছেন। এর মাধ্যমে তারা অন্যদের ঝুঁকিতে ফেলছেন। কোয়ারেন্টিনে নির্দেশনা নাম মানা বা মিথ্যা তথ্য দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।

জাহিদ মালেক বলেন, কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি ‘যথেষ্ঠ’। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে, টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার মাঠে কোয়ারেন্টিন ইউনিট করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে।

মাদারীপুর, ফরিদপুর ও শিবচর এলাকার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাড়ি ফিরে আসায় সেখানেই সেখানেই করোনাভাইরাস আক্রান্তের বেশিরভাগ ঘটনা ঘটছে এবং সরকার ওই এলাকাকে  ‘ভারনাবেল’ বলে মনে করছেন বলে জানান মন্ত্রী।

এর মধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ‘লকডাউনের’ পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, “এটা একটা বড় সিদ্ধান্ত। পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হয় বা আরো বেশি আক্রান্ত হয় তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

“তবে আমরা অন্য দেশের তুলনায় এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের আক্রান্তের সংখ্যা কম (১৭ জন), মৃত্যু সংখ্যাও মাত্র একজন।”