বর্ণিল আয়োজনে মুজিববর্ষে বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 17 Mar 2020 09:02 PM BdST Updated: 18 Mar 2020 11:36 AM BdST
-
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজি দেখতে উৎসুক জনতা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
-
হাতিরঝিলের পাশে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নতুন ভবনেও আলোকসজ্জার উপলক্ষ মুজিববর্ষ। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান
-
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আকাশে আতশবাজি। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
-
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয় আলোক সজ্জা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
-
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজি দেখতে উৎসুক জনতা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
-
-
-
-
বিশ্বজুড়ে ভয়াল রূপ ধারণ করা নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আয়োজনের পরিসর ছিল সীমিত, কিন্তু তাতে রঙের কোনো কমতি ছিল না।
বর্ণময় সেই আয়োজনে আতশবাজির ঝলক রাঙিয়েছিল রাজধানী, আকাশ ঢেকেছিল রঙিন ফানুসে; শুভেচ্ছার বার্তা নিয়ে যুক্ত হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারা; শেখ রেহানা কণ্ঠ মিলিয়েছিলেন বাবাকে নিয়ে গানে; বোনের কবিতায় দিয়েছিলেন কণ্ঠ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
যার হাত ধরে বিশ্ব মানচিত্রে ঘটেছিল বাংলাদেশের অভ্যূদয়, সেই শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী উৎসবের উদ্বোধন মঙ্গলবার হল এমন বর্ণিল আয়োজনে। আর তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গীকারই ঝরল রাষ্ট্রের কর্ণধারদের কণ্ঠে।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম হয়েছিল যে শেখ মুজিবের, কালে তিনিই হয়ে ওঠেন ইতিহাসের মহানায়ক; দেশের মানুষ ভালোবেসে যাকে দিয়েছে বঙ্গবন্ধু উপাধি, স্বাধীন দেশের সংবিধান শ্রদ্ধাভরে যাকে দিয়েছে জাতির পিতার স্বীকৃতি।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে পালনের প্রস্তুতি ছিল, এজন্য এই ১৭ মার্চ থেকে আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কালকে ঘোষণা করা হয় মুজিববর্ষ; গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে শুরু হয়েছিল উদ্বোধন অনুষ্ঠানের ক্ষণগণনা।
কিন্তু হঠাৎ করে চীন থেকে বিশ্ব ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সব ওলট-পালট করে দেয়; কভিড-১৯ রোগ বিশ্বে মহামারীর রূপ নেওয়া এবং বাংলাদেশেও কয়েকজন রোগী ধরা পড়ায় মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠান কাটছাঁট হয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাই সেই নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন, জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
সেই নির্দেশনা মেনে ছোঁয়াচে রোগ কভিড-১৮ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে জনসমাগম না ঘটিয়ে সাজানো হয় উদ্বোধনী আয়োজন, যার শিরোনাম ছিল ‘মুক্তির মহানায়ক’। এতে আগে ধারণ করা মূল অনুষ্ঠানটি দেখানো হয় টেলিভিশনে, অনুষ্ঠানমালার মধ্যে বাইরে থাকে শুধু শুরুর আতশবাজি প্রদর্শনী এবং শেষের লেজার শো।
১০০ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর পৃথিবীতে আশার ক্ষণটি স্মরণ করে রাত ৮টায় আতশবাজির বর্ণিল আলোকচ্ছটায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, হাতিরঝিল, রবীন্দ্র সরোবরসহ কয়েকটি স্থান থেকে আকাশ রাঙানোর সেই দৃশ্য টেলিভিশনের পর্দায়ও দেখানো হয়।
এরপর অনুষ্ঠান চলে যায় টেলিভিশনে; জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সেই অনুষ্ঠান, তারপর আসে রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদের ভাষণ।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে পড়ুক প্রজন্মান্তরে: রাষ্ট্রপতি
‘আমরা জেগে তোমার আদর্শ বুকে নিয়ে’
মুজিববর্ষ: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের ‘সবিশেষ’ উদ্বোধন
ভাষণে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতার স্থপতি থেকে প্রেরণা নিয়ে দেশের কাজে নিজেদের উৎসর্গ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার আদর্শ আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব, এ প্রত্যাশা করি।”
জাতির জনকের জন্মদিন বাংলাদেশে শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। এবার শিশু দিবসের অনুষ্ঠান কাটছাঁটের প্রেক্ষাপটে মুজিববর্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শত শিশু কণ্ঠে আসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে রচিত ‘ধন্য মুজিব ধন্য’ গানটি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয় আলোক সজ্জা। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
শিশুদের সেই গানের পরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবাইকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই তার স্বপ্নের সোনার বাংলার পথে এগিয়ে চলছে দেশ।
“আমরা জেগে রইব তোমার আদর্শ বুকে নিয়ে। জেগে থাকবে এদেশের মানুষ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম, তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে। তোমার দেওয়া পতাকা সমুন্নত থাকবে চিরদিন।”
স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে স্বভূমে জাতির পিতাকে হত্যার পর ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্রের কথাও উঠে আসে বঙ্গবন্ধুকন্যার কথায়।
“ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নিয়েছে তোমাকে। তোমার নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ঘাতকেরা বুঝতে পারেনি, তোমার রক্ত ৩২ নম্বর বাড়ির সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে ছড়িয়ে গেছে সারা বাংলাদেশ। জন্ম দিয়েছে কোটি কোটি মুজিবের।”

হাতিরঝিলের পাশে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নতুন ভবনেও আলোকসজ্জার উপলক্ষ মুজিববর্ষ। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান
স্বদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বমঞ্চে দ্যুতি ছড়ানো মুজিবের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বাংলাদেশ সরকারের আয়োজনে ইউনেসকো, ওআইসিসহ যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যুক্ত হয়েছে, ভাষণে তাদের ধন্যবাদ জানান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা। ধন্যবাদ জানান সেইসব রাষ্ট্রনেতাদের, যাদের এই অনুষ্ঠানে সরাসরি আসার ইচ্ছা থাকলেও আসা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর একে একে শুভেচ্ছার ভিডিওবার্তা নিয়ে আসেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ওআইসি’র মহাসচিব ইউসুফ আল ওথাইমিন।
নরেন্দ্র মোদী বলেন,“বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার ও অনুপ্রেরণা আমাদের এই ঐতিহ্যকে আরও বিস্তৃত করেছে। তার আদর্শ ও মূল্যবোধের সাথে ভারত সর্বদা সংযুক্ত ছিল। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার গভীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে এই এই অভিন্ন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে।”
বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের শুভেচ্ছা বার্তার আগে কবি কামাল চৌধুরীর লেখা ও নকীব খানের সুরে উৎসব সঙ্গীত ‘তুমি বাংলার ধ্রুবতারা’ গানটি গাইতে আসেন দেশের খ্যাতনামা সব সঙ্গীতশিল্পীরা। সাবিনা ইয়াসমিন ও সৈয়দ আবদুল হাদীর পাশে দাঁড়িয়ে তাতে কণ্ঠ মেলান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানা।
শুভেচ্ছা বার্তার পর শত শিল্পী মঞ্চে আসেন যন্ত্রসঙ্গীত নিয়ে। ফুয়াদ নাসেরের প্রযোজনায় তারা পরিবেশন করেন ‘খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামের এক অর্কেস্ট্রা।
এই ঐকতানের রেশ না ফুরোতেই বাবার জন্মদিনের অনুভূতি জানাতে আসেন শেখ রেহানা।
তিনি বলেন, “ঘরে ঘরে মুজিবের আদর্শের দুর্গ গড়ে তুলে তার আলো ছড়িয়ে দেব। কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।”

শেখ রেহানা কথা থামার পর ব্যথাতুর কণ্ঠে কবিতাটি আবৃত্তি করতে আসেন বড় বোন শেখ হাসিনা।
কবিতার এক অংশে বাবা শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা পাঠ করেন, “কেন এমন হল? কে দেবে আমার প্রশ্নের উত্তর? কোথায় পাব তোমায়?”
কবিতার শেষে বাবার স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা দুই বোন একসঙ্গে বলেন, ‘শুভ জন্মদিন’।
পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে ‘চিত্রপটে দৃশ্যকাব্যে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামের একটি থিয়েট্রিক্যাল পারফরমেন্স পরিবেশন করেন দেশবরেণ্য নৃত্যশিল্পীরা।
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাঙালি শিল্পী আকরাম খানের নির্দেশনায় এ কোরিওগ্রাফিতে নেপথ্যে কণ্ঠ দেন আসাদুজ্জামান নূর।
টিভিতে এই অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা আলোকিত হয় আতশবাজি আর লেজার শোতে।
-
স্বর্ণ উদ্ধার করে মাদকের মামলা: চাকরি গেল এসপি আলতাফের
-
সিলেটবাসী ভাসছে বন্যায়, পরিস্থিতির উন্নতির আভাস
-
বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামতে জোর শেখ হাসিনার
-
মহাকাশ বিজ্ঞানী এ এম চৌধুরী আর নেই
-
আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে একুশের গানের রচয়িতাকে শেষ বিদায়
-
‘গণকমিশনের' নামে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
-
মিরপুরে শনিবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়
-
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাভার থেকে দম্পতি গ্রেপ্তার
-
স্বর্ণ উদ্ধার করে মাদকের মামলা: চাকরি গেল এসপি আলতাফের
-
সিলেটবাসী ভাসছে বন্যায়, পরিস্থিতির উন্নতির আভাস
-
বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামতে জোর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
-
মহাকাশ বিজ্ঞানী এ এম চৌধুরী আর নেই
-
আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে একুশের গানের রচয়িতাকে শেষ বিদায়
-
‘গণকমিশনের' নামে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
- ‘পোশাকে আপত্তি তুলে’ তরুণী লাঞ্ছিত নরসিংদী স্টেশনে
- শিক্ষক হতে এসে ফিরলেন তারা লাশ হয়ে
- অবশেষে নায়ক কোহলি, টিকে রইল বেঙ্গালোর
- নাঈমের বিকল্প ভাবনায় কয়েকজন
- ফাইনালের একাদশ ঠিক করে ফেলেছেন আনচেলত্তি
- ‘গণকমিশনের' নামে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- ভূমি সংস্কারে নতুন আইন, জমি রাখা যাবে ৬০ বিঘা
- উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি পাওয়ার পর করণীয়
- টিভি সূচি (শুক্রবার, ২০ মে ২০২২)
- বেনজেমা ফেরায় জায়গা হলো না জিরুদের