নভেল করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাজ্য বাদে ইউরোপ থেকে আসা যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হবে সোমবার দুপুর ১২টায়।
Published : 15 Mar 2020, 07:51 PM
ওই সময়ের পর কোনো দেশের এমনকি বাংলাদেশিরাও ওই সব দেশ থেকে এলে তাদেরও গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
নভেল করোনাভাইরাস ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের দেশ ইতালি থেকে শয়ে শয়ে বাংলাদেশিদের আসার পর দেশে সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছিলেন, রোববার রাত ১২টার পর থেকে দুই সপ্তাহের জন্য যুক্তরাজ্য বাদে ইউরোপের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, “আগামীকাল সোমবার দুপুর ১২টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্য কোনো দেশ থেকে কোনো যাত্রী বাংলাদেশ গ্রহণ করবে না।
“এখানে ব্যবসা বাণিজ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। সবার সুরক্ষার স্বার্থে এধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলো যদি ইউরোপের কোনো দেশের যাত্রী নিয়েও আসেন, তাহলে তাদেরকে নিজ খরচে আবার ফেরত নিতে হবে। এই সিদ্ধান্ত আমরা সংশ্লিষ্ট দেশের সিভিল এভিয়েশন বিভাগকে জানিয়ে দেওয়া শুরু করেছি।”
তবে বাংলাদেশের কোনো যাত্রী বিশ্বের যে কোনো দেশে যেতে চাইলে সেক্ষেত্রে কোনো বাধা বা নিষেধাজ্ঞা নেই বলে জানিয়েছেন বেবিচক চেয়ারম্যান।
বেবিচকের হিসাবে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও এয়ারলাইন্স ফ্লাইট কমিয়ে দেওয়ার ফলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের উঠানামা কমে গেছে।
আগে যেখানে সপ্তাহে ৪৪১টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করত, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সপ্তাহে ফ্লাইটের সংখ্যা নেমে এসেছে ৩৮টিতে।
মফিদুর জানান, ঢাকা বিমানবন্দর হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট আসা-যাওয়া বাবদ তারা এতদিন যে রাজস্ব আয় করতেন তাও এখন কমে গেছে।
গত বছর মার্চ মাসে প্রথম ১৫ দিনে যে আয় হয়েছিল চলতি মার্চের প্রথম ১৫ দিনে তারচেয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা কম আয় হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে দৈনিক ৩৩ লাখ টাকার রাজস্ব হারাতে হচ্ছে।
বিশ্বে কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়ে যাওয়া এবং মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন দেশ বিমান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপের সব ফ্লাইট বাতিল করে দিয়েছে।
বাংলাদেশ আগামী দুই সপ্তাহ সব দেশের নাগরিকদের ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ দেওয়াও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যে সব দেশ বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে যাতায়াত বন্ধ করেছে, সে সব দেশ থেকে ঢাকায় আসাও বন্ধ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, কাতার ও কুয়েত রয়েছে।
ভারতে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরতে পারবেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন শনিবার বলেছিলেন, “অস্বাভাবিকভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশসমূহ থেকে যারা আসবেন, তাদের অবশ্যই দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনের সম্মুখীন হতে হবে।”
ইউরোপ থেকে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ করলেও কার্গো পরিবহন চলবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শনিবার বলেছিলেন, “কার্গো ফ্লাইট ও কুরিয়ার সার্ভিস এগুলো চালু আছে, থাকবে। তবে ফিজিক্যাল মিটিং কমিয়ে যোগাযোগটা অনলাইনে করা হচ্ছে।”