বাংলাদেশি পাসপোর্ট করে ভারতীয়ের বিদেশ পার, মামলার আসামি ৮

পুলিশ প্রতিবেদন গোপন করে ভারতীয় এক নাগরিককে বাংলাদেশি পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার পর সেই ব্যক্তি তা ব্যবহার করে সৌদি আরবে পাড়ি দিয়েছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2020, 03:46 PM
Updated : 12 March 2020, 03:46 PM

শুধু তাই নয়, ভারতীয় ওই নাগরিক বাংলাদেশ ছাড়ার পর তার পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্র গায়েব করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে পাসপোর্টকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এসব অভিযোগ ওই ভারতের নাগরিক ও পাসপোর্ট অফিসের এক সহকারী পরিচালকসহ আটজনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার মামলা হয়েছে।

দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে কমিশনের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে সংস্থার জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

মামলার প্রধান আসামিরা হলেন- ভারতীয় নাগরিক হাফিজ আহম্মেদ, রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের সাবেক সহকারী পরিচালক মো. আবজাউল আলম (বর্তমানে যাত্রাবাড়ী অফিসের সহকারী পরিচালক)।

অন্য আসামিরা হলেন রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের সাবেক এমএলএসএস রঞ্জু লাল সরকার, অফিস সহায়ক হুমায়ন কবির, উচ্চমান সহকারী মো. দেলোয়ার হোসেন, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আলমাস উদ্দিন, দপ্তরী মো. ইব্রাহিম হোসেন, সাঁট-মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুল ওয়াদুদ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিক হাফিজ আহমেদের বিপক্ষে পুলিশ প্রতিবেদন আসার পরও তা গোপন করে পাসপোর্ট দেন।

এজন্য পাসপোর্ট তৈরি, ইস্যু ও বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/ ৪৬৮/ ৪৭১/ ২০১/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

এজাহারে আরও বলা হয়, পুলিশ প্রতিবেদনে আবেদনকারী হাফেজ আহমেদকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। পাসপোর্ট অফিসের বিশেষ শাখার মডিউলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী হুমায়ুন কবির বিষয়টি কম্পিউটার সিস্টেমে ইনপুট করেননি।

পরে ২০১৭ সালের ১৬ অগাস্ট আবেদনপত্রটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপ্রুভাল মডিউলে চলে যায়। পরে আসামি আবজাউল আলম তার দাপ্তরিক বিভিন্ন কাজে সহায়তাকারী আলমাস উদ্দিনের মাধ্যমে ৩০ অগাস্ট পাসপোর্ট প্রদানের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন।

ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর হাফেজ আহম্মেদকে পাসপোর্ট দেওয়া হয় উল্লেখ করে মামলায় বলা হয়, “এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে হাফেজ আহম্মেদ ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবে যান। পরে তার বাংলাদেশে আগমনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।”

ভারতীয় নাগরিকের পাসপোর্ট আবেদনটির মূল নথিপত্র রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস থেকে গায়েব করা হয় বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।