‘মুজিববর্ষের’ আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন বঙ্গবন্ধুর জন্মক্ষণে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মক্ষণের সঙ্গে মিল রেখে আগামী ১৭ মার্চ রাত ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে ‘মুজিববর্ষের’ আনুষ্ঠানিকতার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 March 2020, 12:44 PM
Updated : 12 March 2020, 01:05 PM

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

বৃহস্পতিবার বিকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন নিয়ে সারা দেশের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের নানা নির্দেশনা দেন কামাল চৌধুরী।

তিনি জানান, ১৭ মার্চ রাত ৮টায় দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম এড়িয়ে আতশবাজির আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমেই শুরু হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন।

তিনি বলেন, “আমরা রাত ৮টায় করছি। কারণ এ সময়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আমরা সে সময়টি থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে জন্মশতবর্ষের আয়োজন শুরু করতে চাই।”

১৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১০০ জন বাদ্যযন্ত্রী সেদিন একসঙ্গে যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করবেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে থিম সং করা হয়েছে, সেটি সেদিন শিল্পীরা গেয়ে শোনাবেন। এছাড়া ‘চিত্রপটে, দৃশ্যকাব্যে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও সম্প্রচারিত হবে টিভি চ্যানেলগুলোতে।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশপ্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনে আগামী ১৭ মার্চ থেকে এক বছর ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। ওই দিন বছরব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ অতিথিদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় জনসমাগম এড়িয়ে ১৭ মার্চ সীমিত পরিসরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান উদযাপন করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে প্রধান করে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা এই জন্মশতবর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন চ্যানেলে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করবে।

কামাল চৌধুরী এদিন বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন, ১৭ মার্চ রাতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যেন একইসঙ্গে আতশবাজির আয়োজন করা হয়। একইসঙ্গে সেদিন টিভি চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলো যেন সর্বস্তরের জনগণ দেখতে পারে, তার বন্দোবস্ত করতেও নির্দেশনা দেন তিনি।

মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও যেন ভূমিহীন না থাকেন, তার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সে নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা আসে এই সভা থেকে।

কামাল চৌধুরী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে আমাদের আয়োজনগুলোর সঙ্গে যেন সেবা ও উন্নয়ন সম্পৃক্ত করা হয়। এই মুজিববর্ষে যেন হয়রানি ব্যতিরেকে দুর্নীতিমুক্ত সেবা দেওয়া হয় জনগণকে।”

সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোচনা সভার আয়োজন করা হলেও তাতে যেন জনসমাগম বেশি না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে। ১৭ মার্চ একইসঙ্গে জাতীয় শিশু দিবসও।ওই দিন রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। দুপুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশন করা হবে বিশেষ খাবার।

জেলা প্রশাসকদের উদ্দেশে কামাল চৌধুরী বলেন, “আমাদের সাইটে ভিডিও ফুটেজগুলো রয়েছে। আপনারা সেগুলো প্রচার করুন যেন তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর নানা অবদান সম্পর্কে অবহিত হয়।”

জন্মশতবার্ষিকীর নানা আয়োজনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে তরুণ প্রজন্মের সামনে উপস্থাপন করলে ‘জন্মশতবর্ষ আরও তাৎপর্যমণ্ডিত হবে’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কামাল চৌধুরী বলেন, “স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য সারা বছর জুড়ে যে আয়োজন করা হবে, তাতে যেন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের কথাই বেশি তুলে ধরা হয়। এতে তারা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। আরও সচেতন মানুষ হবে।”