নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে সোমবার আইইডিসিআরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য বিভাগের একার পক্ষে সম্ভব না। আমাদের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। এই দায়িত্ব আমরা সঠিকভাবে পালন করলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।”
নতুন করোনাভাইরাস যেহেতু ছেঁয়াচে রোগ, সেহেতু নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি ও কাশি শিষ্টাচার (নাক-মুখ আড়াল করে) মেনে চলার পরামর্শ দেন আইইডিসিআরের পরিচালক।
তিনি বলেন, “হ্যান্ডশেক না করা, এক মিটারের মধ্যে আসতে হয় এমন কোনো শিষ্টাচার, যেমন কোলাকুলি না করা; তাতে শুধু করোনাভাইরাস নয়, শ্বাসতন্ত্রের অন্য কোনো সংক্রমণও ঠেকানো সম্ভব হবে।”
করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে আপাতত সচেতন থাকা ছাড়া এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকার আর কোনো পথ নেই।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, এ রোগ সংক্রমণের যে চক্র তা আটকে দেওয়ার ওপর রোগটি ছড়ানো বা না ছড়ানো অনেকাংশে নির্ভর করছে।
বাংলাদেশও এ ভাইরাসের ঝুঁকিতে আছে জানিয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক বলেন, এ বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সারাবিশ্বের জন্যই রোগটি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। তারা ভেরি হাইএলার্ট এখন জারি করেছে। কিন্তু এ প্রস্তুতিগুলো আমরা আরও আগেই নিয়ে রেখেছি। আর প্রতিদিনই তা আপগ্রেড হচ্ছে।”
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
এর মধ্যে অর্ধশতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে, আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৯০ হাজারে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে কমিটি
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সভাপতি করে পৃথক কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মাঠ প্রশাসনের গঠিত কমিটির বিষয়ে কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে অবহিত করে এ নিয়ে এক আদেশ জারি করা হয়েছে সোমবার।
জেলা ও উপজেলা কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, এ কমিটি করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রয়োজনে কোয়ারেন্টিনে রাখাসহ প্রয়োজনীয় আর্থিক ও লজিস্টিক সহায়তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াসহ জাতীয় কমিটির পরামর্শ নেবে কমিটি।
জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন পুলিশ সুপার, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা সদর হাসপাতালের পরিচালক বা তত্ত্বাবধায়ক, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর সদরের মেয়র, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা তথ্য কর্মকর্তা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং সিভিল সার্জন।
জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গঠিত কমিটির উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে কমিটিতে থানার ওসি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট পৌর মেয়র, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে।
কমিটির উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।