৩৬০ হিজড়াসহ ভোটার এখন প্রায় ১১ কোটি

এই প্রথম সুযোগ পেয়ে ৩৬০ জন হিজড়া নাম লিখিয়েছেন ভোটার তালিকায়, তাদেরসহ বাংলাদেশে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ কোটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2020, 02:54 PM
Updated : 2 March 2020, 02:54 PM

জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু অন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এতথ্য জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।

বাংলাদেশে জনসংখ্যা এখন প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি; ভোটার সংখ্যা তার ৭০ শতাংশের কাছাকাছি।

সিইসি জানান, চূড়ান্ত হালনাগাদে চূড়ান্ত ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ১১২ জন। 

এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৩০ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩৬০ জন।

গত ২০ জানুয়ারি ভোটার তালিকার খসড়া হালনাগাদ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এতে নতুন ভোটার বেড়েছে ৬৯ লাখ ৭১ হাজার ৪৭০ জন।

সোমবার ভোটার দিবসে তাদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

 চূড়ান্ত এই ভোটার তালিকা থেকে ২০১৯ সালে মৃত্যু, দ্বৈত নাগরিকত্বসহ নানা কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৪০ জনকে।

সিইসি বলেন, এ বছর নতুন ভোটার হয়েছে ৫৫ লাখ ৭৯ হাজার ৩০ জন, ভোটার বেড়েছে ৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল সারা দেশের ৫১৯টি উপজেলা ও থানায় একযোগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। এই কার্যক্রমে প্রথমবারের মতো প্রত্যেক ভোটারের চোখের আইরিশ ও ১০ আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়।

এছাড়াও কোনো রোহিঙ্গা যাতে ভোটার না হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনে রক্ষিত রোহিঙ্গা তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহার করে নিবন্ধিত নাগরিকদের তথ্য যাচাই করা হয়।

সিইসি বলেন, “দেশের নাগরিকদেরকে নির্ভুলভাবে শনাক্তকরণে বায়োমেট্রিকসহ ভোটার তালিকা একটি উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর দলিল। ভোটারদের তথ্য উপাত্ত কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সর্বাধুনিক তথ্যভাণ্ডারে সংগৃহীত থাকে। এলাকাভিত্তিক তথ্য উপাত্ত উপজেলা তথ্যভাণ্ডারে থাকে। ১২০টিরও বেশি সংস্থা ইসির তথ্যভান্ডার থেকে সেবা নিচ্ছে।”

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকাভূক্ত করার প্রক্রিয়া তুলে ধরে নূরুল হুদা জানান, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিবন্ধন কাজ শুরু হয়েছে। অনলাইনে পাওয়া আবেদন যাচাই বাছাই করা হবে। এনআইডি তৈরি করে দূতাবাসের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে ভোটের সুযোগ দেওয়া হবে।

“কিন্তু করোনা ভাইরাসের সমস্যার কারণে কারিগরি টিম পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে।”

‍মুজিব শতবার্ষিকীতে তিন আইন জাতির পিতাকে উৎসর্গ করার কথা জানান সিইসি।

তিনি বলেন, “ইংরেজিতে লেখা দুটি আদেশ (১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও ১৯৭৬ সালের সীমানা পুননির্ধারণ অধ্যাদেশ) এবং একটি আইনের খসড়া (নির্বাচন কমিশনারদের প্রাধিকার আইন) বাংলায় রূপান্তরিত করা হয়েছে।

“ইতোমধ্যে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ তিনটি বিল আইনে পরিণত হলে তা মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে উৎসর্গ করে দেব।”

অনুষ্ঠানে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম তথ্য চিত্রের মাধ্যমে ভোটার হালনাগাদ কার্যক্রমের নানা বিষয় তুলে ধরেন। 

নতুন ভোটার অন্তর্ভূক্তির প্রক্রিয়া, সংশোধন ও নানা তথ্য সংবলিত একটি মোবাইল অ্যাপ উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নতুন ভোটারদের হাতে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও আইনমন্ত্রী।

প্রথমবারের মতো তিন কর্মকর্তাকে (জিএম সাহতাব উদ্দিন, এ এস এম হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সারওয়ার হোসেন) ‘নির্বাচনী পদক’ তুলে দেওয়া হয়।